বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বেইজিং সফর করছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটেছিল। সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে গত মাসের মাঝামাঝি চীন সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তাঁর এ সফরের পর এখন দ্বিতীয় কোনো জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে ইয়েলেন চীনে যাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিবাদের ক্ষেত্রে মোটাদাগে কয়েকটি বিষয় আছে। এগুলো হলো তাইওয়ান ইস্যু, ইউক্রেন যুদ্ধ, বাণিজ্য বিরোধ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা।
বেইজিং সম্প্রতি ঘোষণা দেয়, তারা কম্পিউটার চিপ তৈরিতে ব্যবহৃত দুটি মূল উপকরণের রপ্তানি কমাবে। বেইজিংয়ের এ ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় চীন সফর করছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।
ইয়েলেন সম্প্রতি বলেছিলেন, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দুই দেশ একত্রে কাজ করতে পারে কি না, সে ব্যাপারে তাঁর চীন সফরটি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এই সফরে তিনি চীনের নতুন ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফংয়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো আলোচনা করবেন।
ইয়েলেনের সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র দায়িত্বশীলতার সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে সরাসরি যোগাযোগের কথা বলেছে ওয়াশিংটন। এ ছাড়া বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
উত্তেজনা কমানোর চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইয়েলেন গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত জি ফেংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। উভয় পক্ষ এই আলোচনাকে খোলামেলা ও ফলপ্রসূ হিসেবে বর্ণনা করে।
যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ যেমন রক্ষা করে চলবে, তেমনি মানবাধিকার প্রশ্নেও অটল থাকবে—বেইজিংয়ে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ইয়েলেন ওয়াশিংটনের এ অবস্থান স্পষ্ট করে দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন্ডি কাটলার বিবিসিকে বলেছেন, ইয়েলেনের চীন সফর নিয়ে প্রত্যাশা কমই করা উচিত। সম্পর্ক মেরামত করার মতো অবস্থানে তিনি নেই। আবার রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বা শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে চীনের অনুরোধে সাড়া দেওয়ার জায়গায়ও তিনি অবস্থান করছেন না।