দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা বিদ্যালয় রাজধানীর গবর্মেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল। বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য) হলেও এখানে প্রথম শ্রেণি থেকে একেবারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। মোট শিক্ষার্থী প্রায় তিন হাজার, এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে আছে প্রায় সাড়ে ১ হাজার ১০০। তবে দুই পালা (শিফট) মিলিয়ে এখন কর্মরত শিক্ষক আছেন ৫০ জন, যাঁরা মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ের জনবলকাঠামো অনুযায়ী নিয়োগ পাওয়া। এ শিক্ষকেরাই প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের যেমন পড়ান, তেমনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদেরও পড়ান। একজন শিক্ষককে দিনে পাঁচ থেকে ছয়টি ক্লাস নিতে হয়। আর সপ্তাহে তা গিয়ে দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৫টিতে। ফলে ক্লাসের চাপে থাকতে হয় শিক্ষকদের।
বিদ্যালয়টির কয়েক শিক্ষক জানান, শুধু ক্লাসের চাপ নয়, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পড়ানো হলেও সে বিষয়ে তাঁদের আলাদা প্রশিক্ষণও নেই, যেটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) মাধ্যমে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনাগত সমস্যা যেমন আছে, তেমনি পরীক্ষাসহ শিক্ষাসংক্রান্ত কিছু অসুবিধাও আছে।
এ সমস্যা কেবল রাজধানীর গবর্মেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলেই নয়, দেশের ১৪৫টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বছরের পর বছর ধরে এ সমস্যা চলছে। এর মধ্যে ১০টি বিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিকও (একাদশ ও দ্বাদশ) চালু করা হয়েছে। তবে এসব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কবে, কীভাবে প্রাথমিক স্তর ঢুকে পড়ল, তার কোনো সরকারি নথিপত্র নেই বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার কর্মকর্তা।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অবস্থিত বেশ কয়েকটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েক শিক্ষক ও মাউশির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে যেভাবে এ কার্যক্রম চলছে, তা কোনোভাবেই ভালো নয়। এভাবে চালিয়ে কার্যত মানসম্মত শিক্ষা সম্ভব নয়। যদি এটিকে ভালোভাবে রাখতে হয়, তাহলে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে চলা প্রাথমিক স্তরের জন্য পৃথক শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা প্রশিক্ষণসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা রাখা উচিত। তা সম্ভব না হলে একটি নির্ধারিত সময় দিয়ে প্রাথমিক স্তর বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি নজর বাড়বে। কারণ, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো, বিশেষ করে শহরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো অনেক ‘গরিবের বিদ্যালয়ে’ পরিণত হয়েছে, যেখানে মনোযোগও কম।
মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন সম্প্রতি বলেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কীভাবে এই প্রাথমিক স্তর চালু হলো, সে বিষয়ে মাউশিতে কোনো নথিপত্র নেই। তবে এটা ঠিক যে এখন ভর্তির বিষয়টি মাউশির তদারকিতে হয়। তিনি মনে করেন, এ বিষয়ে অবশ্যই একটি সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত।
এমনিতেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সংকট বেশি, যা শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বড় অন্তরায়। তাই এসব সংকট দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষক কম, তার ওপর বাড়তি চাপ
নতুন করে জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়গুলো মিলিয়ে দেশে এখন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ৬৮৭টি। তবে জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এখনো সরকারি সুবিধার আওতায় আসেননি। ৪০০টির মতো বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সরকারি সুবিধার খাতায় আছেন। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মোট পদ আছে প্রায় ১২ হাজার। তবে এর মধ্যে কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। শিক্ষকেরা নিয়মিতই অবসরে যাচ্ছেন। ফলে এ সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।
মাউশি জানিয়েছে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২০১২ সালের জনবলকাঠামো (প্যাটার্ন) অনুযায়ী শিক্ষক আছেন। এ কাঠামো অনুযায়ী, এক পালায় চলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ আছে ২৫টি। আর দুই পালায় চলা বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন তার দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৫০টি। এর মধ্যে এক পালায় চলা বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক আছেন। আর দুই পালায় চলা বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি দুই পালার জন্য দুজন সহকারী প্রধান শিক্ষক আছেন।
এ জনবলকাঠামো শুধু ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে পড়ানোর কথা বিবেচনা করে দেওয়া। প্রাথমিক স্তর থাকা বিদ্যালয়ের জন্য আলাদা শিক্ষক নেই।
রংপুর জিলা স্কুলের এক শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। বিদ্যালয়টি দুই পালায় চলে। এখন মাধ্যমিকের জনবলকাঠামো অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকসহ ৫৩ শিক্ষক আছেন। কিন্তু প্রাথমিকের জন্য বাড়তি শিক্ষক নেই। পৃথক শিক্ষক না থাকায় তাঁদের ওপর ক্লাসের চাপ পড়ছে।
একেক জায়গায় একেক শ্রেণি
প্রাথমিক স্তর খোলা নিয়ে আবার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও আছে। অনেকটা ‘যে যেভাবে পারে, সেভাবেই চালু করেছে’। যেমন ঢাকার ৩৮টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে চারটি বাদে বাকি সব কটিতেই প্রাথমিক স্তর আছে। কোথাও প্রথম শ্রেণি থেকে, আবার কোথাও তৃতীয় শ্রেণি থেকে। আবার তিনটি বিদ্যালয়ে ‘ফিডার শাখা’ নামে বেসরকারি শাখাও আছে। এ শাখা পুরোপুরি বেসরকারি। সরকারি বিদ্যালয়ের সুবিধা নিয়ে বেসরকারিভাবে পরিচালনা করা হয়। শিক্ষার্থী ফিও বেশি।
বর্তমানে শিক্ষার্থীর তুলনায় এমনিতেই পদসংখ্যা পর্যাপ্ত নেই, সেখানে প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষকের পদ শূন্য। তার ওপর প্রাথমিক স্তরের বাড়তি চাপ নিয়ে মানসম্মত শিক্ষা দূরের কথা, স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়াই দুরূহ ব্যাপার হচ্ছে বলে জানালেন বিদ্যালয়গুলোর অনেক শিক্ষক। ফলে অনেক শিক্ষার্থী শিখনঘাটতি নিয়েই বেড়ে উঠছে।
মাউশির এক কর্মকর্তা বলেছেন, অধিকাংশ শিক্ষক মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রাথমিক স্তর না থাকার পক্ষে। তবে কিছু প্রধান শিক্ষক চান থাকুক। এতে তাঁদের কিছু আর্থিকভাবে লাভবানের সুযোগ আছে।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কীভাবে এই প্রাথমিক স্তর চালু হলো, সে বিষয়ে মাউশিতে কোনো নথিপত্র নেই। তবে এটা ঠিক যে এখন ভর্তির বিষয়টি মাউশির তদারকিতে হয়। তিনি মনে করেন, এ বিষয়ে অবশ্যই একটি সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত।
প্রশিক্ষণ নেই, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আশঙ্কা
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোতে মোট শিক্ষক আছেন প্রায় চার লাখ। শিশুদের পড়ানোর জন্য আলাদাভাবে যত্ন নেওয়াসহ আলাদা কিছু কৌশল আছে। এ জন্যই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। আবার শিশুদের পড়ানো এবং মানসিক বিকাশে সহায়তা করার বিষয়টি মাথায় নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে প্রাইমারি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) অধীন প্রাথমিক শিক্ষকদের দেড় বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যদিও এখন এ কোর্সের মেয়াদ কমিয়ে এর নামও পরিবর্তন করে দিতে চাইছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। বিষয়টি উচ্চ আদালতেও গড়িয়েছে।
কিন্তু সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যেগুলোতে প্রাথমিক স্তর আছে, সেগুলোর শিক্ষকদের পিটিআইয়ের অধীন কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। ফলে শিশু বিকাশে যতটুকু প্রয়োজন ছিল, তা হচ্ছে না বলে শিক্ষকেরাই জানিয়েছেন।
এখন সারা দেশে মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাশাপাশি প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণিতেও নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে অন্য শ্রেণিতেও নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। এ শিক্ষাক্রম মূল্যায়নে বড় পরিবর্তন যেমন আনা হয়েছে, তেমনি পড়ানোর ধরন বদলে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনোভাবেই তা রপ্ত করা সম্ভব নয়। কিন্তু এসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষককে এখনো প্রাথমিক স্তরের জন্য কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। অবশ্য মাধ্যমিকের স্তরের বিষয়ে তাঁরা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। শিক্ষকেরা বলছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না থাকায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে।
যেমন ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুলের এক শিক্ষক গত রোববার জানান, তাঁদের বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়া প্রথম শ্রেণির জন্য কোনো শিক্ষক পাননি। এ জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা নিয়ে কাজ চালাচ্ছেন।
ছুটি নিয়ে সমস্যা
ঘোষিত ছুটি অনুযায়ী, সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক এবং নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় বছরে ছুটি ৭৬ দিন। কলেজে বছরে ছুটি ৭১ দিন। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বছরে ছুটি ৫৪ দিন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন অসংখ্য বিদ্যালয়ে প্রাথমিক স্তর রয়েছে (যেমন ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুল)। এসব বিদ্যালয়ের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বেশি ছুটিতে থাকতে হয়। যেমন এখনকার কথাই ধরা যাক। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় ১৫ রমজান পর্যন্ত ক্লাস হবে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় গত বৃহস্পতিবার থেকেই দীর্ঘদিনের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। শিখনঘাটতি পূরণের কথা বলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা রাখা হয়েছে।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক স্তর আছে, সেসব বিদ্যালয়ের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের কি ঘাটতি পূরণ করা হবে না?
পরীক্ষায় আলাদা নিয়ম
সরকারের সিদ্ধান্তে দেশের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে বছরে তিনটি পরীক্ষা হয় (প্রথম সাময়িকী, দ্বিতীয় সাময়িকী ও বার্ষিক পরীক্ষা)। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হয় বছরে দুটি পরীক্ষা (অর্ধবার্ষিকী ও বার্ষিক)। কিন্তু প্রাথমিক স্তর থাকা দেশের ১৪৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিকের মতো বছরে দুটি পরীক্ষাই হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো চলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। এ জন্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সমন্বয়হীনতা কাজ করে। যেমন নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা বাদ হলেও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ শিক্ষাবিদদের মতামত উপেক্ষা করে গেল বছর থেকে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বন্ধই আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, এমনিতেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সংকট বেশি, যা শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বড় অন্তরায়। তাই এসব সংকট দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে।