মাদকের জন্য জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও অর্থনীতি হুমকির মুখে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

0
19
মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীছবি: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া

মাদকের অবৈধ পাচার ও অপব্যবহারের কারণে জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘দ্য এভিডেন্স ইজ ক্লিয়ার: ইনভেস্ট ইন প্রিভেনশন। ব্রেক দ্য সাইকেল। স্টপ অর্গানাইজড ক্রাইম।’ মানে হলো, ‘প্রমাণ স্পষ্ট: প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন। চক্র ভেঙে ফেলুন। সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন করুন।’

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। আধুনিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ যুবশক্তিই পারে দেশকে চরম শিখরে নিয়ে যেতে। ভবিষ্যতে উন্নত এবং সফল রাষ্ট্রের কাতারে উপনীত হতে হলে আমাদের এই তরুণসমাজকে মাদক থেকে অবশ্যই মুক্ত রাখতে হবে।’

দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানাভাবে অবৈধ মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু ও কিশোরদের এই গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।’

দেশকে মাদকমুক্ত করতে অপ্রতুল ও সীমিত জনবল নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কাজ করছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে বর্তমানে নিয়োজিত রয়েছে ২ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে এনফোর্সমেন্টে (আইন প্রয়োগে) নিয়োজিত রয়েছেন ১ হাজার ৬২২ জন। অপরাধ দমনে কাজ করে এমন অন্যান্য সংস্থার জনবলের সঙ্গে তুলনা করলে এ সংখ্যা সীমিত। এ ছাড়া যানবাহন–স্বল্পতাসহ অপরাধ দমনে ও অভিযান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উন্নত উপকরণের অভাব রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

মাদকাসক্তদের জন্য সরকারের বিভাগীয় পর্যায়ে আলাদা কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ ছাড়া সম্প্রতি সাতটি বিভাগীয় শহরে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.