প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রী উধাও, ছেলেসহ আগুনে পুড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর

0
63
আত্মহত্যার চেষ্টার করেছেন মহিন উদ্দিন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি।

মানিকগঞ্জে স্ত্রী প্রেমিকের সঙ্গে চলে যাওয়ায় সন্তানসহ গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার করেছেন মহিন উদ্দিন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মহিনের স্ত্রী শিউলী আক্তার (৩৫) সৌদি আরব থাকতেন। সেখান থেকে দেশে ফেরার পর প্রেমিকের উধাও হন তিনি। এ ক্ষোভ থেকে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। অগ্নিদগ্ধ তুহিন ওই দম্পতির একমাত্র সন্তান। সে ভাড়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

ঘটনার পর অগ্নিদগ্ধ তুহিনকে (৯) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আর অগ্নিদগ্ধ মহিন উদ্দিন মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ পহারায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মহিন উদ্দিদের প্রতিবেশী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে মাহিন-শিউলীর বিয়ে হয়। বিয়ের ২ বছর পর তুহিনের জন্ম হয়। তবে মহিন মাদকাসক্ত হওয়ায় তাদের সংসারে অভাব ছিল। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় দেড় বছর আগে কাজের সন্ধানে সৌদি আরব যান শিউলি। সেখানে ময়মনসিংহ জেলার রাসেল মিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে শিউলির প্রেমের সম্পর্ক হয়। ফলে গ্রামের বাড়িতে টাকা-পয়সা পাঠানো বন্ধ করে দেন শিউলি। গত ডিসেম্বরে দেশে আসেন তিনি। এরপর গত ৮ জানুয়ারি স্বামী-সন্তানকে রেখে প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে করেন শিউলি। এ ঘটনা সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভাড়ারিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শিশুসন্তান তুহিন ও নিজের শরীরের পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন মহিন। এরপর প্রতিবেশীরা এগিয়ে তাদের শরীরের আগুন নেভান। তবে ততক্ষণে তুহিনের শরীরের বিভিন্ন স্থান আগুনে ঝলসে যায়। এতে মহিনের শরীর ও ঝলসে যায়। পরে প্রতিবেশীরা শিশুটিকে হরিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে দগ্ধ মহিনকে আটক করে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন বলেন, শিউলীর সঙ্গে অন্য ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। আমার ৯ বছরের সন্তানকে রেখে সে আরেক ব্যক্তিকে বিয়ে করে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। এ কারণ আমি ক্ষোভ থেকে নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। আমি আমার সন্তানকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে চাইনি। আমার পেছনে আমার ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল, সেটা আমি খেয়াল করিনি। আমার শরীরে পেট্রোল ঢালার সময় সন্তানের শরীরেও আগুন লেগে যায়।

মানিকগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দাম্পত্য কলহের জেরে শিশুসন্তান ও নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।

তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তিকে সদর হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সে কিছুটা সুস্থ হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অগ্নিদগ্ধ শিশু তুহিন হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.