ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, নতুন পর্ষদ গঠন

0
67
ন্যাশনাল ব্যাংক, ছবি: সংগৃহীত

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন করা, পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরিচালক নির্বাচনসহ কয়েকটি কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আজ বৃহস্পতিবার পৃথক দুই আদেশে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়েছে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও জনস্বার্থে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকটিকে রক্ষায় আমরা গতকাল বৈঠক করে বর্তমান পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নিই। এরপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে গতকালই বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমরা মনে করি, এতে ব্যাংকটির গ্রাহকের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থও রক্ষা হবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক আদেশে জানিয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক ‘ঋণনিয়মাচার ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন প্রদান করা, পর্ষদ কর্তৃক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ করা, পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের শেয়ার একই পরিবারে কেন্দ্রীভূত করা, পরিচালক নির্বাচন বা পুনর্নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি, পর্ষদের গোচরে পরিচালকগণ কর্তৃক আর্থিক অনিয়ম সংঘটন, পর্ষদের নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি, ব্যাংকিং সুশাসন ও শৃঙ্খলা বিঘ্ন করার মাধ্যমে ব্যাংক-কোম্পানি ও আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে পর্ষদ কর্তৃক সম্পৃক্ত থাকার ঘটনা ঘটেছে।’

ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১–এর ৪৭ (১) এবং ৪৮ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও জনস্বার্থে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ব্যাংকটির পর্ষদের দায়িত্ব ছিল আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু তারা সেটি না করতে পারায় আগের পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেওয়া হয়েছে।

নতুন পর্ষদ গঠন

আরেক আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুনভাবে পরিচালনা পর্ষদ গঠনের লক্ষ্যে সাতজনকে পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নবগঠিত সাত সদস্যের পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হয়েছেন তিনজন; আর পরিচালক হয়েছেন সাতজন।

স্বতন্ত্র পরিচালকেরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন।

তাঁদের মধ্যে পর্ষদের চেয়ারম্যান হয়েছেন আইবিএর সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। মেঘনা ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগের শর্তে তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে নতুন চার পরিচালক হলেন পারভীন হক সিকদার, উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমান, সিকদার ইনস্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক মো. সফিকুর রহমান ও উদ্যোক্তা শেয়ারধারী হিসেবে পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.