‘মব’ সৃষ্টি করে তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাসায় হামলার পেছনে ওই বাসার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক

0
41
জুয়েল খন্দকার, শাকিল আহমেদ ও শাকিল খন্দকার, ছবি সংগৃহীত

মধ্যরাতে ‘মব’ তৈরি করে গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাসায় ঢুকে তল্লাশির নামে মালামাল তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পেছনে ওই ভবনের সাবেক তত্ত্বাবধায়কের হাত রয়েছে। শাকিল আহমেদ নামের ওই ব্যক্তি লোক জড়ো করেন এবং বাসাটিতে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে, এমন তথ‍্য দিয়ে সেখানে তল্লাশি চালাতে উসকানি দেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আজ বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের এ ঘটনায় ভবনের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক শাকিল আহমেদ (২৮) ছাড়া জুয়েল খন্দকার (৪৮) এবং তাঁর ছেলে শাকিল খন্দকার (২৪) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রাজধানীর গুলশানের এই ভবনের একটি বাসায় গতকাল মধ্যরাতে তল্লাশির নামে ঢুকে পড়েন একদল ব্যক্তি
রাজধানীর গুলশানের এই ভবনের একটি বাসায় গতকাল মধ্যরাতে তল্লাশির নামে ঢুকে পড়েন একদল ব্যক্তি

তানভীর ইমাম সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি)। তিনি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে শতাধিক মানুষ গুলশান-২ নম্বরে ৮১ নম্বর সড়কের একটি ভবন ঘেরাও করে বলতে থাকেন, সেখানে তানভীর ইমামের কয়েক শ কোটি টাকা রাখা আছে। তাঁরা রাত ১২টার পর ওই ভবনে ঢুকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে একটি বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তছনছ করেন।

বিষয়টি নিয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, গুলশানের ওই বাসায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসরদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে ‘তল্লাশি’র নামে ২০ থেকে ২৫ জন লোক দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে পড়েন। তাঁরা তল্লাশির অজুহাতে বাসায় ঢুকে মালামাল তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাটের চেষ্টা করেন।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুলশান জোনের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে শাকিল খন্দকার, জুয়েল খন্দকার ও শাকিল আহমেদ নামের তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

প্রেস উইং থেকে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে শাকিল আহমেদ একসময় ওই বাসায় কেয়ারটেকারের (তত্ত্বাবধায়ক) কাজ করতেন। তিনিই মূলত জনতাকে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে, এমন তথ‍্য দিয়ে বাসায় তল্লাশি চালাতে উসকানি দেন।

প্রেস উইং থেকে আরও বলা হয়, এর আগে গত পরশু রাত সাড়ে ১০টার দিকেও একই অজুহাতে একদল জনতা বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ এসে তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মর্মে আবারও সতর্ক করছে যে কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন। কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে যেন সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানাকে জানানো হয়। সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তাবিধানে বদ্ধপরিকর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.