আড়াই মাস আগে রাজধানীর বাড্ডার সড়কে মধ্যরাতে রেস্তোরাঁকর্মী সুমন চন্দ্র পাল হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন এ হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন আরিফ তালুকদার (২০), ইমরান হোসেন (২৩) ও শ্যামল রায় (২০)। পুলিশ বলছে, এই তিনজন পেশায় রিকশাচালক। কিন্তু তাঁরা এর আড়ালে ছিনতাই–ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ শেষে মধ্যরাতে বাড্ডার বাসায় ফিরছিলেন সুমন চন্দ্র পাল। তিনি যখন উত্তর বাড্ডা লাজ ফার্মার বিপরীতে প্রগতি সরণির ফুটপাতে আসেন, সে সময় ভোলায় স্ত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার সময় আক্রান্ত হন। পরে আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ‘গভীর রাতে ঢাকার রাস্তায় সুমনকে মারল কে, উত্তর খুঁজছেন স্ত্রী প্রতিমা’ শিরোনামে অনলাইনে গত ২০ মার্চ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে আজ বুধবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, থানা–পুলিশের পাশাপাশি ডিবির গুলশান জোনাল টিমও এ হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে দেখা যায়, সুমন চন্দ্র পাল খুনে সরাসরি অংশ নেন আরিফ তালুকদার, ইমরান হোসেন ও শ্যামল রায়। এঁদের মধ্যে আরিফ সুমনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সেদিন ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে একটি রিকশা নিয়ে মধ্যবাড্ডা থেকে ওই তিনজন বের হন। রিকশায় নিয়ে রামপুরা বাজার থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করেন।
পরে বাড্ডায় সুমন চন্দ্র পালকে পেয়ে একটি ব্যাগ ও মুঠোফোন নিয়ে টানাটানি করতে থাকেন তিনজন। একপর্যায়ে সুমনকে ছুরিকাঘাত করে ব্যাগ ও মানিব্যাগে থাকা তিন হাজার টাকা নিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান আজ জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তির সহায়তায় এ হত্যাকাণ্ডে ওই তিনজনকে শনাক্ত করা হয়।
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘সুমন চন্দ্র পাল যখন তাঁর ব্যাগ ও মোবাইল ফোন দিচ্ছিলেন না, তখন তিন ছিনতাইকারী তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। এর আগেও তাঁরা ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িত ছিলেন।’