বাজারে আসছে ১০০ টাকার নতুন নোট। ১২ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়া হবে। নতুন এই ১০০ টাকার নোট প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য কার্যালয় থেকে ছাড়া হবে। নতুন এই নোটের নকশাতেও পরিবর্তন আসছে। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
বর্তমানে প্রচলিত ১০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি আছে। নতুন নোটে তা নেই। তবে এসব নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা চালু থাকবে। এ ছাড়া মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) ছাপানো হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে টাকা জাদুঘর থেকে নির্ধারিত মূল্যে এসব নোট সংগ্রহ করা যাবে।
১০০ টাকার নতুন নোটে কী থাকছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ মিমি x ৬২ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ সুতি কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ থাকছে। নোটটিতে থাকছে নীল রঙের আধিক্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নোটের সামনে বাঁ পাশে থাকছে ষাট গম্বুজ ও বাগেরহাটের ছবি। নোটের মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা-কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছন ভাগে আছে সুন্দরবনের ছবি।
নোটটিতে মোট ১০ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সামনের বাঁ পাশে ৪ মিমি চওড়া লাল ও রুপালি রঙের সমন্বয়ে নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে, যেখানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ ও ‘১০০ টাকা’ খচিত আছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের সামনের ডান দিকে নিচে তিনটি ছোট বৃত্ত রয়েছে, যা হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভূত হয়।
১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোটে কী ছিল
এর আগে গত ১ জুন বাজারে এসেছে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট। এর আগে সব ধরনের টাকা ও ধাতব মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে হঠাৎ নতুন নোট বাজারে ছাড়া বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত নতুন নোট বাজারে আসেনি। এ পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোকে নতুন নোট দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাজারে আসা ১০০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার ছিল ১৬০ মিমি x ৭০ মিমি। নোটটিতে ছিল বেগুনি রঙের আধিক্য। নোটের সামনে বাঁ পাশে ছিল জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও সাভারের ছবি। নোটের পেছন ভাগে ছিল জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি। নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছিল।

৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৩০ মিমি X ৬০ মিমি। নোটটিতে ছিল গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য। নোটটির সামনের বাঁ পাশে ছিল আহসান মঞ্জিলের ছবি। নোটের পেছনে জলছাপ এলাকার ডান পাশে ছিল শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’-এর ছবি। ৫০ টাকার নোটে মোট আট ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছিল।
২০ টাকার ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২৭ মিমি x ৬০ মিমি। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য ছিল। নোটটির সামনের বাঁ পাশে ছিল ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দিরের ছবি। নোটের পেছন ভাগে জলছাপ এলাকার ডান পাশে ছিল পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি।