এরপরও আমি মনে করি, এ ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কী হবে, সেটা পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এটা শুধু রাজনৈতিক কৌতূহলের কারণে নয়, তুরস্ক কীভাবে এই বিপর্যয় থেকে পুনর্গঠনের পথে এগোবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় কতটা ভালো প্রস্তুতি নিতে পারবে, সে বিবেচনাতেও সেটা করা দরকার।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও আইনসভা নির্বাচন এ বছরের জুন মাসে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এমনকি ভূমিকম্পের আগে থেকেই এরদোয়ানের জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেছিল। অর্থনৈতিক সংকট ও এরদোয়ানের স্বৈরতান্ত্রিক ধরনের শাসনের ওপর ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণে ভোটারদের মধ্যে (বিশেষ করে তরুণ ভোটার) তাঁর জনপ্রিয়তা কমেছে।
ভূমিকম্পের পর দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে যে রাজনৈতিক বেকায়দায় পড়েছে এরদোয়ান সরকার, তা কাটিয়ে উঠতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাঁর জাস্টিস ও ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি), তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদমাধ্যম এবং সরকারি সংস্থা পরিচালিত মসজিদগুলো খুব দ্রুত ভূমিকম্পকে ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় বিপর্যয়’ বলে সংজ্ঞায়িত করে। এর অর্থ হলো, এ ভূমিকম্পে যে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কোনোভাবেই এরদোয়ানের পক্ষে এড়ানো সম্ভব ছিল না।
এরদোয়ান নিজেই ভূমিকম্পকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বলেছেন, ‘এ ধরনের বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুত থাকা সম্ভব নয়।’ তিনি এটিকে ‘নিয়তি’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
কিন্তু সমালোচকেরা এতে আশ্বস্ত হতে পারেননি। বিশ্লেষকেরা ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকার জন্য এরদোয়ান এক ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত যে শাসনপদ্ধতি চালু করেছেন, সেটাকে দায়ী করেছেন। ভূমিকম্পের পর সহযোগিতা প্রদানের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার জন্যও এ বিষয় দায়ী বলে তাঁরা মনে করেন।