ভয়ভীতি-হুমকি উপেক্ষা করে এ. কে. আজাদের দিনব্যাপী কর্মসূচি

0
147
শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ।

আওয়ামী লীগের একাংশের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে ফরিদপুর সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে শোক দিবসের আলোচনা সভা ও গণসংযোগ করেছেন জননেতা এ. কে. আজাদ। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ. কে. আজাদ ফরিদপুরে মাসব্যাপী শোক দিবসের নানা কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানা গেছে। তবে কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে মাচ্চরের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয়ে একদল যুবক ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে মহড়া দেয় এবং অনুষ্ঠান না করতে হুমকি-ধমকি দেয়। সেই হুমকি উপেক্ষা করেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পূর্বনির্ধারিত এসব কর্মসূচি পালন করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মাচ্চর ইউনিয়নের ধুলদি বাজারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা হয়। সভায় স্থানীয় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ. কে. আজাদ, পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মনিরুল হাসান মিঠু, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, মাচ্চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ মুন্সি প্রমুখ।

এর আগে সকালে ধুলদি-রাজাপুর ২ নম্বর ওয়ার্ডের মান্নান ও নাছির শেখের বাড়িতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ওমর আলীর মোল্লার সভাপতিত্বে উঠান বৈঠক হয়। পরে চন্ডিপুর ব্র্যাক নার্সারিতে অনুষ্ঠিত অপর উঠান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন কাজল। দুপুরে বাকচর শ্রীঅঙ্গন জগৎপ্রভুর আঙিনায় উঠান বৈঠকে সভাপতি ছিলেন মন্দির কমিটির সভাপতি নিমাই চন্দ্র সাহা।

এসব অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কোতোয়ালি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মানোয়ার হোসেন, কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, কোতোয়ালি স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুম মিয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে এ. কে. আজাদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন, যেখানে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত একটি শোষণহীন সমাজের কথা তিনি বলেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন রাষ্ট্র মানুষের সব মৌলিক অধিকারের দায়িত্ব নেবে। কিন্তু তিনি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। তবে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তিনি উন্নয়নশীল দেশ থেকে এরই মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে আমরা আগামীতে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে হবে, তবেই অবহেলিত দিক্ষণাঞ্চলের শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এতে অঞ্চল সমৃদ্ধ হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।’

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষ বলেন, ‘বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধীরা সরকারের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারা আসন্ন নির্বাচন বানচালের পায়তারা করছে, বিদেশিদের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের নামে নালিশ করে অনুগ্রহ পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই শোকের মাসে আমাদের শপথ নিতে হবে, সম্মিলিতভাবে আমরা রাজপথে ওই অপশক্তিকে মোকাবিলা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের কিছু নেতা ফরিদপুরে শোকের মাসে জাতীয় কর্মসূচি পালনে বাধা সৃষ্টি করছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। সকাল থেকেই আমার দলের নেতাকর্মীরা টেলিফোনে কল করে জানিয়েছেন, বিভিন্ন স্পটে মোটরসাইকেল করে এসে তাদের হামলা ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করতে বাধাগ্রস্ত হলে আমাদের নেতাকর্মীরা সেটা মেনে নেবে না।’

বিপুল ঘোষ হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, ‘দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে সে যত বড় নেতাই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে।’

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. মোতালেব হোসেন, পরিচালক মো. বেলাল হোসেন, ডিক্রিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মেহদী হাসান মিন্টু, জেলা মোটর-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জামাল উদ্দিন কানু, ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহিনুর রহমান সোহান, অম্বিকাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী বারী প্রমুখ।

এ. কে. আজাদ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্ঘটনায় আহত সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফ মণ্ডলকে দেখতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে যান। এসময় তিনি তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নেন। আহতের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এ. কে. আজাদ। পরে বাদ যোহর তিনি ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে শামসুল উলুম মাদ্রাসায় শহর আওয়ামী লীগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম আজাদের মা রাবেয়া বেগমের জানাজায় অংশ নেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.