মহারাষ্ট্রে আপাতত বহাল থাকছে শিন্ডের সরকার

0
86
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে।

ভারতের মহারাষ্ট্রে আপাতত বহাল থাকছে বিদ্রোহী একনাথ শিন্ডের সরকার। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে যেহেতু আস্থাভোটে অংশ না নিয়েই পদত্যাগ করেছিলেন, তাই তার সরকারকে পুনর্বহাল করা সম্ভব নয়।

মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা পুনর্দখলের মামলায় দীর্ঘ সময় শুনানি শোনার পর বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ ।

গত বছর জুন মাসে মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা পরিবর্তন নাটকের সাক্ষী ছিল গোটা ভারত। উদ্ধব ঠাকরে শিবির থেকে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেসহ ১৬ জন বিধায়ক দলত্যাগ করেন। পরে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন শিন্ডে। বিদ্রোহী শিবিরকে আসল ‘শিবসেনা’ বলে দাবি করে নির্বাচন কমিশনের কাছে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি চান শিন্ডে। নির্বাচন কমিশন সেই অনুমতিও দেয় তাদের। এমন অবস্থায় উদ্ভব ঠাকরের হাত থেকে একে একে সরকার, দল, প্রতীক সব চলে যায়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে শিন্ডেসহ ১৬ জন বিধায়কের বিধায়ক পদ দলত্যাগ বিরোধী আইনে বাতিল করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন উদ্ভব। সেই মামলার শুনানি হয়েছে বৃহস্পতিবার।

আদালতে  উদ্ধব ঠাকরের পক্ষে ছিলেন কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। অন্যদিকে একনাথ শিণ্ডের পক্ষে ছিলেন মহেশ জেঠমালানি ও হরিশ সালভে।

দলত্যাগ আইন প্রণয়নে বিধানসভার স্পিকার ও অনাস্থা আনার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকার বিষয়টি এদিন উঠে আসে দেশের শীর্ষ আদালতে। শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির ভূমিকা তিরস্কার করে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘রাজ্যপাল যেভাবে অনাস্থাভোট ডেকে দিয়েছিলেন, তার কোনো যুক্তিই ছিল না। ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে শাসক দলের হাতেগোনা কিছু বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করা, অনাস্থা ভোট ডাকার জন্য যথেষ্ট কারণ নয়।’

মামলার যেহেতু এদিন চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। তাই মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চের দিকে ঠেলে দিয়ে এদিন সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, আপাতত স্থিতাবস্থা থাকবে। একনাথ শিন্ডেসহ ১৫ জন বিধায়ককে স্রেফ দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য তাদের এখনই বরখাস্তও করা যাবে না। উদ্ধব ঠাকরে যেহেতু ইস্তফা দিয়েছেন। তাই তাকে ফের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ফিরিয়া আনা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থাৎ একনাথ শিন্ডে আপাতত বহন থাকবে।

শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পর দল ও সরকারের রাশ ফিরে পাওয়ার বদলে ধাক্কা খেলেও প্রাথমিকভাবে খুশি উদ্ধব শিবির। তারা মনে করছেন, এতে নৈতিক জয় হয়েছে তাদের। উদ্ধব শিবিরের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের কথায়, ‘বিজেপি এভাবেই রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যপাল বসিয়ে সংবিধান ও গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। রাজভবনে রাজনীতির খেলায় মেতে থাকছেন রাজ্যপালরা। সর্বোচ্চ আদালত যে তিরস্কার করেছে তা আসলে বিজেপির গালে থাপ্পড়।’

উদ্ভব ঘনিষ্ঠ শিবসেনার সংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপি সরকারকে যে ষড়যন্ত্র করে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। এই ষড়যন্ত্রে সামিল ছিলেন খোদ রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। এই রায় হল একনাথ শিণ্ডের গালে কষিয়ে একটা থাপ্পড়। জানি না এরপরেও লজ্জা হবে কি না। অবশ্য নির্লজ্জ, বেইমানদের থেকে লজ্জাবোধ আশা করাটাই বৃথা।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.