ভোলার ইলিশা-১ কূপে গ্যাস পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকালে পরীক্ষায় গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। এই কূপ থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। চাহিদা না থাকায় আপতত এই গ্যাস তোলা হবে না। তবে ভোলার গ্যাস শিগগিরই সিএনজি রুপান্তরিত করে ঢাকার শিল্পে দেওয়া শুরু হবে। তখন নতুন কূপের গ্যাস কাজে লাগতে পারে।
গত ৮ মার্চ ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিয়া ইউনিয়নে মালের হাট এলাকায় ‘ইলিশা-১’ কূপ খনন কাজ শুরু করে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান গ্যাসপ্রম। ৩ হাজার ৪৩৬ মিটার গভীরে ২৪ এপ্রিল গ্যাসের সন্ধান পায়। বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার মো. আলমগীর হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এ কূপে ১৮০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে। কূপে আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বাপেক্সের এ কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী-১ এবং গত ১৯ অক্টোবর ভোলা নর্থ–১ কূপে গ্যাস পাওয়া কথা জানায় বাপেক্স। সব মিলে ভোলার দুই গ্যাসক্ষেত্রে জেলায় মোট ৯টি গ্যাস কূপ খনন করা হয়েছে।
ভোলায় গ্যাসের সন্ধানে প্রথম ভূকম্পন জরিপ চালানো হয় ১৯৮৬-৮৭ সালে। প্রথম অনুসন্ধান কূপ খনন করা হয় ১৯৯৪ সালে। ২০০৯ সালের ১১ মে হতে ভোলার শাহবাজপুরক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। উত্তোলন সক্ষমতা ১২ কোটি ঘনফুট হলেও বর্তমানে শাহবাজপুরক্ষেত্র থেকে দিনে ৬.৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে। একটি নতুন কূপ খোঁড়া হচ্ছে। এই গ্যাসক্ষেত্রে দেড় ট্রিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে ধারণা বাপেক্সের। এর ৩৩ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত ভোলা উত্তর গ্যাসক্ষেত্রে ৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তলন সক্ষমতার দুইটি কূপ রয়েছে। ভোলা উত্তরে ০.৬৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ থাকতে পারে। শাহবাজপুর ক্ষেত্র থেকে বর্তমানে ভোলার দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে (২২৫ ও ৩৫ মেগাওয়াট) গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় শিল্প ও আবাসিক গ্রাহকদেরও গ্যাস দেয়া হচ্ছে।
ভোলার বাড়িত গ্যাস সিএনজিতে রুপান্তরিত ঢাকার আশেপাশের শিল্প কারখানায় সরবরাহ করা হবে। ইন্ট্রাকো সিএনজি এই কাজ করবে। প্রতিঘনমিটারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা। প্রথম পর্যায়ে দিনে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি করে আনা হবে। সরকার আপতত ভালুকা-গাজীপুরের জ্বালানি সংকটের ভোগা কারখানায় এই গ্যাস দিতে চায়।