রোজায় স্কুল: হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হয়নি, শুনানি আগামীকাল

0
59
রমজান মাস জুড়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছন হাইকোর্ট।

পবিত্র রমজানে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আজ সোমবার স্থগিত হয়নি। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আজ এ আদেশ দেন।

এ আদেশের ফলে আগামীকাল মঙ্গলবার স্কুল বন্ধ থাকবে বলে মনে করছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, আগামীকাল শুনানির পর এ বিষয়ে বলা যাবে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল দিয়ে পবিত্র রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম ১৫ দিন চালু রাখার সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। অন্যদিকে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাহমুদা খানম।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদন করেছে, তা আগামীকাল বেলা সাড়ে ১১টায় পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন চেম্বার আদালত। চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

তবে চেম্বার আদালতের আদেশের ফলে আগামীকাল স্কুল বন্ধ থাকবে বলে জানান রিট আবেদনকারীর আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ একটি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছে, স্থগিতাদেশ পায়নি। চেম্বার আদালত বিষয়টি আগামীকাল বেলা সাড়ে ১১টায় পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই শুনানির মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে রমজানের সময় ১৫ দিন সরকারি-বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার কথা বলা হয়। রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। উভয় সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শফিউর রহমান চৌধুরী।

রিট আবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক স্মারকে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক ছুটির তালিকায় এক প্রজ্ঞাপনে পবিত্র রমজান মাসের ৩০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ৮ ফেব্রুয়ারি রমজানের প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার নোটিশ জারি করে। আবেদনকারীর মেয়ে রাজধানীর রাজাবাজারের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। রমজান মাসে স্কুলে যাতায়াত করা ছাত্রী ও অভিভাবকের জন্য চরম দুর্দশার কারণ হবে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা বিভাগের অপর এক স্মারক অনুসারে রমজান মাসের প্রথম ১৫ দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার নোটিশ জারি করে।

গতকাল হাইকোর্টের আদেশের পর রিট আবেদনকারীর আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ বলেছিলেন বলেন, পবিত্র রমজানে ৩০ দিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে বলে প্রথমে একটি প্রজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়। তা সংশোধন করে রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রথম ১৫ দিন বেসরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা থাকবে বলে পৃথক সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এই দুই সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে পবিত্র রমজানে ৩০ দিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি যেহেতু আদালতের বিচারাধীন, তাই আগামীকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে কি না, এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেবে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.