ঢাকা–১৭ আসনের উপনির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ভোট পড়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ সোমবার ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ কথা জানান। তিনি বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইসি বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।
মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। আমি ১০–১৫টা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে। সব কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ দেখেছি। এ পর্যন্ত কোনো অশান্তির খবর আমরা পাইনি। প্রতিটি কেন্দ্রেই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ হয়েছে। ঢাকার বাইরে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
ভোটের হার প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, ঢাকায় ভোট পড়ার হার খুব কম। প্রকৃত হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তাঁরা ধারণা করছেন, এই হার ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হতে পারে। সর্বোচ্চ হলে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে। ফলাফলের পর এটা চূড়ান্তভাবে বলা যাবে। আজ সাতটি পৌরসভাতেও নির্বাচন হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
একজন প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে, এতে কি সুষ্ঠু ভোট বলা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘১২৪টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে। একটি কেন্দ্রের পরিস্থিতি দিয়ে তো বলা যায় না ভোট সুষ্ঠু হয়নি। আমরা সঠিক অবস্থাটা এখনো জানতে পারিনি। আমরা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু তথ্য পেয়েছে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে কিছুটা জেনেছি। কিছুটা আমাদের সোর্স থেকে পেয়েছি। তাঁরা জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী যিনি ছিলেন, তিনি অনেক সমর্থকসহ কেন্দ্রের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। ওনার সঙ্গে অনেক ইউটিউবার ছিলেন। সেখানে কেবল বৈধ কার্ডধারীরা ঢুকতে পারেন। কিন্তু ইউটিউবাররা তো ঢুকতে পারেন না।’
মো. আলমগীর বলেন, ওই প্রার্থী অনেক ইউটিউবার নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। ৭০ জনের মতো লোক ছিলেন। তখন পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। প্রার্থী কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরা পারবেন না। তখন তিনি সেখানে নাকি পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করেছেন। পরে পুলিশ তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘রাস্তায় যখন তিনি (হিরো আলম) বের হয়ে আসছেন, তখন কে বা কারা ধাওয়া দিয়েছে। আপনারা যেটা বলেছেন, শারীরিকভাবে অ্যাসাল্ট করেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এটা আমরা কামনা করি না। যারা এটা করেছে, অবশ্যই অন্যায় কাজ করেছে। আমরা বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছি। ইতিমধ্যে একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছে। এর সঙ্গে আরও যারা জড়িত আছে, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা–মোকদ্দমা করার কথা বলা হয়েছে।’
ভোটের হারে ইসি সন্তুষ্ট কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট হলেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করি। কিন্তু ভোটাররা কেন যায়নি, এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। সেই কারণগুলো আমি জানি না। আর অনুমান করে বলাও ঠিক হবে না। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। আপনারা সেটা বিচার–বিশ্লেষণ করবেন। তখন আমরা জানতে পারব, কেন ভোটার আসেনি।’