‘আমাদের কাছে দেওয়ার মতো আর কিছু নেই। কোনো কাজকর্মও করতে পারছি না আমরা। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমরা জীবিত দেশে ফিরতে চাই।’
দালালের মাধ্যমে ইউরোপে যেতে গিয়ে লিবিয়ায় আটকে পড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ করিম তাঁর পরিবারের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এই আবেদন জানান। গতকাল সোমবার পাঠানো ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এই ভিডিও বার্তায় লিবিয়া গিয়ে আটকে পড়া আরও আটজনের কথা বলা হয়। তাঁরা হলেন গন্ডামারা ইউনিয়নের রুকনুল ইসলাম, মো. মোরশেদুল আলম, মোহাম্মদ কাউছার মিয়া, আজগর হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ আশেক ও তাঁর ভাই ইব্রাহিম খলিল এবং বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদীর আইয়ুব আলীকেও দেখা যায়। ভিডিও বার্তায় বর্তমানে তাঁদের নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য বাঁশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তাঁরা।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই ৯ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক সহযোগিতা ও সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর অনলাইনে ‘বৃষ্টির পানি আর লতাপাতা খেয়ে আছি, আমাদের বাঁচাও’ শিরোনামে ও ২০ সেপ্টেম্বর ছাপা সংস্করণে প্রতিবেদন ছাপা হলে আলোচিত হয় বিষয়টি।
লিবিয়ায় আটকে পড়া দুই ভাই মোহাম্মদ আশেক ও ইব্রাহিম খলিলের মা সোনিয়া বেগম বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের ভিডিও দেখে আর ঘুমাতে পারছি না। আমি সরকারের কাছে তাদের এনে দেওয়ার আবেদন করছি।’
ভিডিও বার্তা দেখার পর গিয়াস উদ্দিনের বাবা আবদুল মজিদ বলেন, ‘সামর্থ্য থাকলে আমি লিবিয়ায় উড়ে যেতাম। কিন্তু আমি অসহায়।’
এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, ‘লিবিয়ায় আমাদের দূতাবাসে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি। সেখান থেকে যোগাযোগ করে দালালদের হাত থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁরা বর্তমানে নিরাপদ স্থানে আছেন। কিন্তু তাঁদের ভিসা-পাসপোর্ট কিছুই নেই। তাই কোন পন্থায় তাঁদের ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠানো ভিডিওটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। নিরাপদে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’