ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গুরুতর অসুস্থ। ৯৮ বছর বয়সী এই ভাষা সৈনিককে রোববার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাত বারোটার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, আহমদ রফিককে করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তার রক্তচাপ ও হার্ট রেট কিছুটা বেশি। শরীরও বেশ দুর্বল। ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতার কারণে এ ধরনের অবস্থা দেখা দিতে পারে।
তার কেয়ারটেকার জানান, গত কদিন ধরেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। আগেও একটি হাসপাতালে সাত দিন চিকিৎসা নিলেও শারীরিক অবস্থান তেমন উন্নতি হয়নি। ২০০৬ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে নিঃসন্তান এই ভাষা সংগ্রামী কেয়ারটেকার ও গাড়ি চালককে নিয়ে রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় বসবাস করছেন।
রবীন্দ্র গবেষকরা মনে করেন, রবীন্দ্রনাথের বিষয় ধরে ধরে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি গবেষণা করেছেন আহমদ রফিক।
ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সেই দিনগুলোতে ঢাকা মেডিকেলের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র ছিলেন আহমদ রফিক। ফজলুল হক হল, ঢাকা হল ও মিটফোর্ডের ছাত্রদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলার কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি সভা-সমাবেশ মিছিলে ছিলেন নিয়মিত।
১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী ছাত্রদের মাঝে একমাত্র তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। ১৯৫৫ সালের শেষ দিকে প্রকাশ্যে এসে বেরিয়ে পড়াশোনায় ফেরেন আহমদ রফিক। পরে এমবিবিএস ডিগ্রি নিলেও চিকিৎসকের পেশায় যাননি তিনি। ১৯৫৮ সালে তার প্রথম প্রবন্ধের বই ‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’ প্রকাশ হয়। তারপর লেখালেখিতেই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন।
১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণকারী এই লেখক পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্রত্ত্বাচার্য উপাধিসহ অনেক সম্মাননা।