ভারী বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতি পাঁচ জেলায়, বন্যাকবলিত ১০ লাখ মানুষ

0
185
দক্ষিণ হাশিমপুর এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ওপর দিয়ে প্রায় কোমরসমান পানি বইছে। চট্টগ্রাম, ৮ আগস্ট

চলতি মাসের শুরু থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে রেকর্ডভাঙা বৃষ্টি ঝরেছে। প্রবল ওই বৃষ্টিতে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বেশির ভাগ উপকূলীয় জেলায় হঠাৎ বন্যা ও শহরে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। দেশের বেশির ভাগ এলাকা থেকে ওই উপকূলীয় এলাকা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সুন্দরবনের বেশির ভাগ অংশ জোয়ারের পানিতে দিনে দুবার করে ডুবে যাচ্ছে।

এদিকে ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে চট্টগ্রামের পরেই রয়েছে যথাক্রমে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও ফেনী।

সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা শিবিরের ২৪ হাজার ৫৩৩ জন বাসিন্দাও রয়েছে, যারা শিবিরের মধ্যে উঁচু ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণভান্ডার থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘হঠাৎ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছি। আমাদের আরও খাদ্য ও ত্রাণসহায়তা প্রস্তুত আছে। দরকার হলে তা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আবারও পাঠানো হবে।’

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, বরিশাল বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হলেও সম্পদের ক্ষতি কম হয়েছে। কারণ, পূর্ণিমার প্রভাব কেটে গিয়ে ও বৃষ্টি কমে ওই পানি নেমে গেছে। তবে আজ শুক্রবার থেকে আবারও দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। নদ-নদীর পানি এতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। আগামী পরশু তিস্তা অববাহিকায় পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে যেতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম বড়ুয়া বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোয় অনেক বছর পর এত প্রবল বৃষ্টি হলো। ৫ থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির কারণে এ বন্যার সৃষ্টি হয়। তবে আগামী এক সপ্তাহে আপাতত এ ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা আমরা দেখছি না।’

বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ইমার্জেন্সি রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (ইআরসিসি) থেকে গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ বন্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের হঠাৎ বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছয়টি জেলা। ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে চট্টগ্রামের পরেই রয়েছে যথাক্রমে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও ফেনী। বন্যায় আক্রান্ত এ পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠে, যাদের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ জন এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ওই বন্যায় এখন পর্যন্ত ২০ জন মারা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.