ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশ থেকেই এক লাখ টন চাল আমদানি করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হবে। আর পাকিস্তান থেকেও ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হবে সরাসরি অর্থাৎ সরকার থেকে সরকার (জি-টু-জি) পর্যায়ে।
সচিবালয়ে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে দুই দেশ থেকে চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
পাকিস্তান থেকে এ দফায় ৫০ হাজার টন আতপ চাল আমদানি হবে। এ নিয়ে বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তর ও ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) মধ্যে গত মঙ্গলবার জি-টু-জি ভিত্তিতে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী করতে এ এমওইউ করা হয় বলে সরকারের পক্ষ থেকে ওই দিন জানানো হয়।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি অনুমোদন দেয়। সে অনুযায়ী পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন আতপ চাল রপ্তানির প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশকে। প্রতি টন ৪৯৯ মার্কিন ডলার হিসাবে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চালের আমদানিমূল্য দাঁড়ায় ২ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকার মতো।
এদিকে ভারত থেকে আমদানি করা হবে নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল। দরপত্রে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এ চাল সরবরাহের কাজ পেয়েছে সে দেশের গুরুদিও এক্সপোর্টস করপোরেশন। এ চালের টনপ্রতি দাম ৪৫৪ দশমিক ১৪ মার্কিন ডলার। তাতে ৫০ হাজার টন চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশের প্রায় ২৭৭ কোটি টাকা।
ভোজ্যতেল, চিনি, মসুর ডাল ও সার
এদিকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল এবং ১৫ হাজার টন চিনি কেনারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রয় কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৯৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
ভোজ্যতেল কিনতে ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহের কাজ পেয়েছে সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস। প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা। এতে ব্যয় হবে ৩৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সুপার অয়েল রিফাইনারি থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৫০ পয়সা দরে কেনা হচ্ছে আরও ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল। এতে ১৮৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর শবনম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৬২ টাকা ৯৫ পয়সা করে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম তেল কেনায় ব্যয় হবে ৩৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
১৫ হাজার টন চিনির মধ্যে মেঘনা সুগার রিফাইনারি থেকে ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা দরে কেজি দরে কেনা হচ্ছে ১০ হাজার টন। বাকি ৫ হাজার টন চিনি কেনা হবে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে, প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা।
শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৫০ কেজির বস্তায় ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হচ্ছে। প্রতি কেজি ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে মোট ৯৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে এ মসুর ডাল কেনা হবে।
এ ছাড়া আজ ক্রয় কমিটিতে রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি এবং মরক্কো থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৯৬ কোটি ৬ লাখ টাকা।