ভারতে ভারী বৃষ্টি ও ভয়াবহ ধসে ৩১ জনের প্রাণহানি

0
16
জম্মু-কাশ্মির ও হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টি

অবিরাম বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ ধসে বিপর্যস্ত উত্তর ভারতের দুই রাজ্য জম্মু-কাশ্মির ও হিমাচল প্রদেশ। বুধবার (২৭ আগস্ট) কাশ্মিরের অর্ধকুমারী নামক এলাকার কাছে মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের যাত্রাপথে ধস নামলে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এতে হয়েছে আরও ২৩ জন। চলতি মাসেই মেঘ বিস্ফোরণ বৃষ্টিপাতে এই দুই রাজ্যে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ভূমিধসের কারণে এখনও কিছু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে কাজ চলছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

মূলত গত তিনদিন ধরে জম্মু-কাশ্মিরের একাধিক জেলায় টানা বর্ষণ চলছে। এর ফলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির একাধিক এলাকায় বন্যার সঙ্গে ভূমিধসও দেখা দিয়েছে। জম্মুতে বেশ কিছু বড় বড় অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেক সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবাও ব্যাহত।

মঙ্গলবার পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়েছে। উদ্ধার কাজে একযোগে কাজ করছে জেলা প্রশাসন, রাজ্য পুলিশ, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা টিম, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা টিম, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।

আবহাওয়া অধিদফরের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে পরবর্তী সাড়ে ৬ ঘণ্টায় সর্বাধিক ২২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ইতোমধ্যেই দক্ষিণ কাশ্মিরের সঙ্গম এলাকায় ঝিলম নদীর পানি স্তর ২২ ফুট বেড়ে যাওয়ার কারণে বন্যার উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জম্মু সিটি, আরএস পুরা, সাম্বা, আখনুর, নাগরোটা, বিজয়পুর এবং উধমপুর ও কাঠুয়ার কিছু অংশ।

আজ বুধবার পর্যন্ত জম্মু ডিভিশনের স্কুল, কলেজসহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মির রাজ্য শিক্ষাবোর্ডও তাদের সমস্ত পরীক্ষা আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেছে।

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আপাতত বৈষ্ণোদেবীর যাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন ‘প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বেশ কয়েকটি পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে, ফলে অস্তিত্বহীন যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে এখনো লড়াই করছে। কোনও ফিক্সড ওয়াইফাই লাইন নেই, ব্রাউজিং নেই এবং অ্যাপসগুলিও হতাশাজনকভাবে ধীরে ধীরে খুলছে। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর আর কখনও এরকম সংযোগ বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থায় কাটাতে হয়নি।’

উল্লেখ্য, চলতি মাসেই হিমাচল প্রদেশে হরপা বানে ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.