ভারত-বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচকে ঘিরে আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছিল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা নামে ভারতের একটি ধর্মীয় সংগঠন। গত সোমবার কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদের বিশেষ রীতি পালন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। এ ছাড়াও প্রথম টি-টোয়েন্টির দিন বন্ধের ডাক দিয়েছে তারা।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশ দলের নিরাপত্তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে ভারত সরকার। টাইগারদেরকে তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন কানপুরের পুলিশ কমিশনার হরিশ চন্দ্র।
গ্রিন পার্কে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে হরিশ চন্দ্র বলেছেন, হোটেল থেকে মাঠ পর্যন্ত দুই দলকে তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব অ্যান্টি–টেররিজম স্কোয়াডকে (এটিএস) দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বাংলাদেশ দলকে নিয়ে সতর্ক। এই ম্যাচের জন্য কঠিন নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকেও তথ্য নিচ্ছি। কেউ প্রতিবাদের চেষ্টা করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে হরিশ চন্দ্রের বরাত দিয়ে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে এই টেস্টের জন্য যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গত ১৭ আগস্ট প্রথমে গোয়ালিয়রে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাতিলের দাবি জানিয়েছিল ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। হিন্দু মহাসভার সহসভাপতি ডাঃ জয়বীর ভরদ্বাজ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তারা এই ম্যাচ বাতিলের সবরকমের চেষ্টা করবে। এ ছাড়াও ম্যাচটি বাতিল না হলে হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছে এই রাজনৈতিক দলটি।
এ প্রসঙ্গে জয়বীর ভরদ্বাজ বলেছেন, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে হিন্দুদের গণহত্যা করা হচ্ছে… মন্দির ধ্বংস করা হচ্ছে। এরপরেও প্রধানমন্ত্রী মোদি এখানে ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই, হিন্দু মহাসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে গোয়ালিয়রে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচের বিরোধিতা করা হবে। শান্তি বজায় রাখার জন্য ম্যাচটি বাতিল করা উচিত কারণ অন্যথায় দেশে অশান্তি হবে।
এরপর দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচকে কেন্দ্র করেও একই হুমকি দেয় অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। যার অংশ হিসেবে কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদের বিশেষ রীতি পালন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।
গতকাল (মঙ্গলবার) দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে কানপুরে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল। তাই তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে ভারত সরকার। এই ম্যাচের আগে দুই দিন অনুশীলন করার সুযোগ পাবে শান্ত-লিটনরা।
উল্লেখ্য, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে সিরিজের শেষ ও কানপুর টেস্ট। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি।