চার দশক আগে জুলাইয়ের ২৭ তারিখ মুক্তি পায় তাঁর প্রথম অ্যালবাম। এরপর আশি ও নব্বইয়ের দশকে তিনি হয়ে ওঠেন পপ সংগীতের ‘রানি’। তাঁর মাতাল করা গায়কি আর উদ্দাম নাচের তালে বুঁদ হয়েছিলেন সারা দুনিয়ার শ্রোতা-দর্শক। কেবল কী গান, বেপরোয়া জীবনযাপন, নানা বিতর্ক আর গুঞ্জন—ক্যারিয়ারজুড়েই খবরের শিরোনামে ছিলেন ম্যাডোনা। হঠাৎই পপ শিল্পীর ভক্তদের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে আসে তাঁর অসুস্থতার খবর। তাঁর অসুস্থতার কারণ নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানা কথা। নিউইয়র্ক পোস্ট, পেজ সিক্স, ফিমেল ফার্স্ট অবলম্বনে তাঁর অসুস্থতার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
গত ২৮ জুন রাতে ম্যাডোনার অসুস্থতার প্রথম খবর প্রকাশ করেন তাঁর দীর্ঘদিনের ম্যানেজার গাই ওজারি। তিনি জানান, ২৪ জুন গুরুতর জীবাণু সংক্রমণ নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি হন পপ শিল্পী। এক দিন পরই আসে স্বস্তির খবর—বাড়ি ফিরেছেন ম্যাডোনা, তবে পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও সময় লাগবে।
এর মধ্যেই তাঁর অসুস্থতা নিয়ে নতুন নতুন খবর আসতে থাকে। সর্বশেষ প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ২৪ জুন প্রায় মরেই গিয়েছিলেন ম্যাডোনা। নিজের বাড়িতে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। ইনজেকশন দেওয়ার পর তাঁর চেতনা ফিরে আসে!
অনেক গণমাধ্যমই এই পরিস্থিতির তুলনা করেছে বছর কয়েক আগে আরেক শিল্পী ডেমি লোভাটোর ঘটনার সঙ্গে। সেবার মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে মরতে বসেছিলেন তিনি। ম্যাডোনার ঘটনাও মাদকাসক্তির কারণে ঘটেছে কি না, নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পেজ সিক্স, আউটলুকসহ অনেকে গণমাধ্যমই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে, শরীরের প্রতি উদাসীন থাকায় এ হাল হয়েছে ম্যাডোনার। বয়স যে ৬৪ হলো, সেটা নাকি তাঁর মনে থাকে না। এই বয়সে আগের মতো দৌড়ঝাঁপ যে সম্ভব নয়, সেটা যেন তিনি বুঝেও বুঝতে চান না। ফলে, প্রায়ই বিদ্রোহ করে তাঁর শরীর। আগে সমস্যা আমলে না নেওয়ায় এবার বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল।
অনেক গণমাধ্যম আবার জানিয়েছে, শরীরে আর কোনো প্লাস্টিক সার্জারি না করতে ম্যাডোনাকে আগেই সতর্ক করেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা।
দ্য সানকে তাঁর ব্যক্তিগত ট্রেইনার রামোনা ব্রাগ্রানজা জানান, ‘বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফল দেখে তাঁকে আগেই বলেছিলাম, শরীরে আর কোনো কাটাছেঁড়া না করতে। তাঁর উচিত পেশাদারদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া। এ ছাড়া তাঁর যে যথেষ্ট বয়স হয়েছে, এটাও বোঝা উচিত। এই অসুস্থতার ঘটনা তাঁর জন্য “ওয়েক-আপ কল”। তাঁর ৬৪ বছর শরীর এখন প্রকৃতির স্বাভাবিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে।’
দিন কয়েক আগে জানা যায়, বাড়ি ফিরে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ম্যাডোনা। কয়েকবার বমি হওয়ায় তাঁকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করার কথাও ভাবা হয়েছিল। কিন্তু কিছুটা সামলে ওঠায় সেটা আর করতে হয়নি।
চলতি মাস থেকেই ৮৪ দিনের বিশ্ব সফর শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু এ অবস্থায় তা যে আর সম্ভব নয়, সেটা বুঝে আগেই স্থগিত করা হয়েছে কনসার্ট। গান তো পরে তাঁর ভক্তদের এখন একটাই প্রার্থনা, ‘দ্রুত সেরে উঠুন, ম্যাডোনা।’