সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না ব্রাজিলের। বিশেষ করে কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই তারা যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। সর্বশেষ আর্জেন্টিনার কাছে তাদের ঘরের মাঠেই হারলো সেলেকাওরা। সব মিলিয়ে এ বছর ৯ ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরে গেল ব্রাজিল। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি হার রোগে আক্রান্ত পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অনেকটা তেমনই। তবে এর পেছনে রয়েছে কয়েকটি কারণ। সমকাল পাঠকদের জন্য সেই কারণের উল্লেখযোগ্য তিনটি তুলে ধরা হলো–
আক্রমণভাগে চোটের হানা: ব্রাজিলের আক্রমণভাগে নিয়মিতই চোটের দাগ। নেইমার ক’দিন ভালো তো ক’দিন চোটে। বড় আসরগুলোর আগে প্রায়ই চোটে ভোগেন তিনি। যে কারণে দলটির আক্রমণভাগকে ভুগতে হয় অনেক। আবার তিনি ফিট থাকলে অন্য কেউ থাকেন না। এটাও তাদের আক্রমণকে ঝিমিয়ে দেয়। এবার যেমন লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে গেলেন। তাঁর সঙ্গে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও নেই। দু’জনের অভাব হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ব্রাজিল। এখন যাও রদ্রিগোর কাঁধে দায়িত্ব, কিন্তু তিনিও নেই ছন্দে। এক প্রকার জোড়াতালিতেই চলতে হচ্ছে দলটিকে। সর্বশেষ আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও তেমন ছাপ স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। আপৎকালের কোচ দিনিজও এই ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন।
- ২০২৩ সালে ৯ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই হেরেছে
- র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান হারিয়ে তিনে নেমেছে তারা
- চোটে ভুগছেন নেইমার ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র
লম্বা সময় নেই প্রধান কোচ: সেই কাতার বিশ্বকাপের পর কোচ তিতে দায়িত্ব ছেড়েছেন। এর পর কয়েক মাস ধরে নতুন কোচ খুঁজেছিল তারা। কিন্তু কেউই রাজি হননি। পছন্দের তালিকায় ছিলেন লুইস এনরিকে এবং জিনেদিন জিদানের মতো তারকা কোচও। তাদের কেউই ব্রাজিলের প্রস্তাবে হ্যাঁ বলেননি। শেষ পর্যন্ত দিনিজকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর অধীনে ব্রাজিলের অবস্থা যাচ্ছে তাই। কোনো টেকনিক বা প্ল্যানিং নেই বললেই চলে। যেটুকু খেলছেন ফুটবলাররা, সেটা আগের কোচের দেখানো পথ ধরেই। এমনকি ফরমেশন বা ম্যাচ রিডিংয়েও তার মুনশিয়ানা দেখা যায় না।
তিন মৌসুমের হারজিতের খাতা
মৌসুম ম্যাচ জয় ড্র হার
২০২৩-২৪ ৬ ২ ১ ৩
২০২২-২৩ ১০ ৬ ০ ৪
২০২১-২২ ১৩ ১০ ৩ ০
রক্ষণে নেই আগের ধার: রক্ষণভাগের অবস্থাও করুণ। আগের মতো শক্ত রক্ষণ দেয়াল নেই তাদের। গোলপোস্টের নিচে বিশ্বমানের গোলকিপার অ্যালিসন বেকার থাকলেও প্রায়ই ভুল করে ফেলছেন তিনি। বিশেষ করে সেন্টার ব্যাক পজিশনে দুর্বলতা চোখে পড়ার মতো। এর বড় কারণ হলো, এডার মিলিতাও না থাকা। রিয়াল মাদ্রিদে খেলা এই ডিফেন্ডার অনেক দিন ধরেই ইনজুরিতে ভুগছেন। তাঁর শূন্যতা কাউকে দিয়ে পূরণ করতে পারছেন না কোচ দিনিজ। সেজন্য ডিফেন্ডার বলতে এখন মার্কিনিউসই সব। তাঁকেই মূল দায়িত্বটা নিতে হয়। তবে একা তাঁর পক্ষে সব সামাল দেওয়াও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে প্রতিপক্ষও সহজে সুযোগ তৈরি করছে।
এ বছর যাদের কাছে হেরেছে সেলেকাওরা: সেনেগাল, মরক্কো, উরুগুয়ে, কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনা