ব্রাজিলের ফুটবল কনফেডারেশনকে আবারও নিষেধাজ্ঞার হুমকি ফিফা ও কনমেবলের

0
125
রিও ডি জেনিরোয় ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের সদরদপ্তর, রয়টার্স

নতুন চিঠি পাঠিয়ে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনকে (সিবিএফ) সতর্ক করেছে ফিফা ও দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল)। সেই সতর্কবার্তা হলো, এ দুটি সংস্থার গঠন করা কমিশন সিবিএফ পরিদর্শনের পরই কেবল সেখানে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। এর পাশাপাশি সিবিএফকে আরও একবার নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে ফিফা ও কনমেবল।

ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, গত রোববার এ নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে ফিফা ও কনমেবল। আগামী বছর জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে কমিশন দল সিবিএফ পরিদর্শনে যাবে বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। সিবিএফ নিষিদ্ধ হলে তার ফল ব্রাজিলের জাতীয় দল এবং ক্লাবগুলোকেও ভোগ করতে হবে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ফিফা ও কনমেবল।

সিবিএফে পাঠানো চিঠিতে সই করেছেন ফিফার সহযোগী ফেডারেশনগুলোর পরিচালক কেনি জ্যাঁ মারি এবং কনমেবলের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মনসেরাত হিমিনেজ গ্রান্দা।

দুজনই চিঠিতে বলেছেন, রিও ডি জেনিরো আদালত ব্রাজিলের সুপিরিয়র কোর্ট অব স্পোর্টসের (এসটিজেডি) সভাপতি হোসে পেরদিজকে সিবিএফে হস্তক্ষেপকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তাঁর ব্যাপারে ফিফা ও কনমেবলের এই দুই ক্ষমতাসীন জেনেছেন, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে তিনি জোরাজুরি করছেন এবং এর পাশাপাশি এসটিজেডিকেও অনুরোধ করেছেন যেন আগামী জানুয়ারিতে সিবিএফে অন্তবর্তী বোর্ড পরিচালকদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

সিবিএফের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এদনালদো রদ্রিগেজকে
সিবিএফের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এদনালদো রদ্রিগেজকে,এএফপি

এই চিঠিতে সিবিএফকে দুই পক্ষ (ফিফা ও কনমেবল) আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে যে ফিফার নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডে বাইরের হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য এবং সভাপতির পদ শূন্য হলে বয়োজ্যেষ্ঠ পরিচালক সে দায়িত্ব নেবেন। আগামী ৮ জানুয়ারি ব্রাজিলে যৌথ কমিশন পাঠানোর কথা চিঠিতে জানিয়েছে ফিফা ও কনমেবল। ‘ও গ্লোবো’ সেই চিঠির কিছু অংশ প্রকাশ করেছে, ‘ফিফা ও কনমবেল কঠোরভাবে জানাচ্ছে যে কমিশন পাঠানোর আগপর্যন্ত সিবিএফ এবং সেখানে নির্বাচনসম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।’

চিঠিতে এরপর আরও বলা হয়েছে, ‘যদি এই নির্দেশ না মানা হয়, তাহলে বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না ফিফার। তাতে নিষেধাজ্ঞাও আসতে পারে। আর ফিফার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দ্বারা সিবিএফ যদি নিষিদ্ধ হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবেসদস্য হিসেবে (ফিফার) সব রকম অধিকার হারাতে হবে এবং সেটি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আগপর্যন্ত।’

নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত যে ক্লাবগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলবে, সেটাও বলা হয়েছে বিবৃতিতে, ‘(নিষেধাজ্ঞার) অর্থ হলো, সিবিএফ অধিভুক্ত কোনো দল বা ক্লাব আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না। আর এটি কার্যকর থাকবে নিষেধাজ্ঞা চলা সময় পর্যন্ত। সিবিএফ কিংবা এর অধীনস্ত অ্যাসোসিয়েশনগুলোও ফিফা ও কনমেবলের কোনো উন্নয়নমূলক প্রকল্প, ট্রেনিং কিংবা কোর্সের আওতায় থাকবে না।’

এই চিঠি পাওয়ার পর সিবিএফের অন্তবর্তী প্রধান হোসে পেরদিজ ও গ্লোবোর ‘স্পোটর্স প্যানারোমা’কে পাঠানো বার্তায় বলেছেন, ‘সন্তুষ্টি ও সম্মানের সঙ্গে জানানো হচ্ছে যে ফিফার কাছ থেকে আমরা নতুন চিঠি পেয়েছি। তারা সিবিএফের নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বলেছে। আমি বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি।’

গত ৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সভাপতির পদ থেকে এদনালদো রদ্রিগেজকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি তখন জানিয়েছিল, রিও ডি জেনিরোর একটি বিচারিক আদালত বলেছেন, ২০২২ সালে সিবিএফ ও রিও ডি জেনিরোর কৌঁসুলিদের মধ্যে যে চুক্তির ভিত্তিতে রদ্রিগেজ সভাপতির দায়িত্ব নেন, সেটি বৈধ ছিল না।

কৌঁসুলিরা তাঁদের ক্ষমতার সীমানা ডিঙিয়ে এ চুক্তি করেছিলেন। ৩০ দিনের মধ্যে সিবিএফে নতুন সভাপতি নির্বাচনও দিতে বলেছিলেন আদালত। ফিফা এর আগে পাঠানো চিঠিতে সিবিএফকে জানিয়েছিল, বোর্ডের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া গেলে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.