ব্রাজিলিয়ানদের কাছে ফুটবল ধর্মের মতো। তাদের চেয়ে ফুটবল ঐতিহ্য এবং ফুটবলে মেতে থাকা জাতি আছে কিনা সন্দেহ। অন্য দেশ ফুটবল খেলে অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নতির কথা চিন্তা করে। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল খেলে মনের আনন্দে। রাস্তায়, গলিতে ফুটবল খেলতে খেলতে জন্ম নেয় তারকা।
ব্রাজিলিয়ানদের কাছে হলুদ জার্সিও পবিত্র পোশাকের মতো। কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলটির গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার যেমন বলেছেন, হলুদ জার্সি পরলে ব্রাজিলিয়ানরা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই হলুদ জার্সি কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ। এটা কীভাবেই বা এলো?
শুরুতে ব্রাজিল হলুদ জার্সি পরে খেলত না। সব কটি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সেলেকাওরা ১৯৫০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলেছে সাদার ওপর নীল ডিজাইনের জার্সি পরে। মনে করা হয় যে, ১৯৫০ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই মারাকানা ট্র্যাজেডির পর জার্সি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাজিল।
ব্রাজিলের কনফেডারেশন ১৯৫৩ সালে নতুন জার্সির ডিজাইন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়। কারণ ওই সময় যে জার্সি ছিল তা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না বলে উল্লেখ করা হয়। জার্সি ডিজাইনের বিজ্ঞপ্তিতে বলে দেওয়া হয় হলুদ, সবুজ, নীল ও সাদা থাকতে হবে। যাতে করে জার্সি ব্রাজিলের জাতীয় পতাকার প্রতিনিধিত্ব করে।
অনুমিতভাবে অনেকগুলো জার্সির ডিজাইন জমা পড়ে। যার রঙ মূলত হলুদ,হাতা ও কলারে সবুজ এবং বুকে ব্রাজিল ফেডারেশনে লোগে আছে। যেটা নীল ও সাদা রঙয়ের। ওই জার্সিটা চূড়ান্ত হয়। নীলের প্রাধান্য রাখতে ব্রাজিলিয়ানরা অবশ্য নীল শর্টস পরেন। প্রশ্ন হলো,ব্রাজিলের পতাকায় সবুজের প্রাধান্য বেশি হলেও জার্সি কেন হলুদ।
কারণ সেই ১৯৫০ এর দশকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল দলকে ক্যানারিনহা বলা হতো। ক্যানারিনহা শব্দটা এসেছে ক্যানারি থেকে। যার অর্থ হলদে। ব্রাজিলের ফুটবল দলের ওই ডাকনামের সঙ্গে মিল রেখেই হলুদ জার্সিটাকে চূড়ান্ত করা হয়। যে জার্সি পরে ১৯৭০ এর দশকে ‘জোগো বনিতো’ বা সুন্দর ফুটবলের প্রদর্শনী দেখিয়েছে ব্রাজিল।