‘এখন আমরা সুপার এইটে খেলব। সব ম্যাচই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আমার মনে হয়, টি-টোয়েন্টিতে বড় দল বলে কিছু নেই। আশা করি, সুপার এইটে আমরা ভালো করতে পারব।’
সেন্ট ভিনসেন্টে নেপালকে আজ ২১ রানে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে কথাটা বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটে গ্রুপ ১-এ বাংলাদেশের তিন প্রতিপক্ষের নাম—ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান। সুপার এইটে দুটি গ্রুপ থেকে দুটি করে দল খেলবে সেমিফাইনালে।
সংবাদ সম্মেলনে ঘুরেফিরে বাংলাদেশের বাজে ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ একাধিকবার উঠেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের টপ অর্ডার এখনো জেগে উঠতে পারেনি। নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে তো টপ অর্ডারের কঙ্কালই বেরিয়ে গিয়েছিল! শুধু টপ অর্ডার কেন, প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের স্কোর যথাক্রমে ০, ১০, ৪, ১৭, ৯ ও ১৩।
অধিনায়ক নাজমুল টানা রান–খরার মধ্যেই আছেন। একই পরিস্থিতির মধ্যে আছেন লিটন দাসও। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সুপার এইটে ওঠার পেছনে বোলারদের অবদানই বেশি করে চোখে পড়ে। সংবাদ সম্মেলনে তাই জানতে চাওয়া হয়েছিল, বোলাররা এভাবে আর কত ম্যাচ জেতাবেন? ব্যাটসম্যানেরা কি জেগে উঠবেন না…?
নাজমুলের উত্তর, ‘এটা তো আসলে সম্ভব না যে প্রতিদিনই বোলাররা জেতাবে। আমি আশা করব, প্রতিদিনই জেতাক। কিন্তু ব্যাটসম্যানেরও দায়িত্ব আছে এবং কেন হচ্ছে না, এটা সবাই চেষ্টা করছে বের করার। কিন্তু কোনোভাবেই হচ্ছে না এবং এটা গ্রহণযোগ্য নয়। সত্যি বলতে এই উইকেট ১৪০-১৫০ রান করার মতো হয়তো ছিল। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। অবশ্যই আমাদের জন্য এটা চিন্তার একটা কারণ।’
সুপার এইট নিয়ে অন্য এক প্রশ্নেও উঠেছে বাজে ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ। অধিনায়ক হিসেবে সুপার এইটে এমন ব্যাটিং চিন্তার কারণ কি না—এই প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল বলেছেন, ‘অবশ্যই চিন্তার কারণ। এভাবে ব্যাটিং করলে মনে হয় না সেটা দলের জন্য ভালো কোনো দিক। আমরা শুরুটাও পাচ্ছি না, শেষে ব্যাটসম্যানেরাও শেষ করতে পারছে না। তাই অবশ্যই চিন্তার কারণ। কিন্তু এখান থেকে আমাদের বের হয়ে আসতেই হবে এবং কীভাবে বের হতে হবে, সেটা নিয়ে অনেক পরিকল্পনা সব সময়ই হয়। কিন্তু এই ভুল বারবারই হচ্ছে। যেটা আমি বলতে পারি, পরের রাউন্ডে এই ভুলগুলো যত কম করা যায়।’
আগে ব্যাট করে ১৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ ১০৬ রান তোলার পর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মনের অবস্থাটা কেমন ছিল? সমর্থকদের মনে হারের শঙ্কা যে উঁকি দেয়নি, তা নয়। খেলোয়াড়দের মনের অবস্থাটা কি ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময় ১০-১৫ ওভার হওয়ার পরই খেলোয়াড়েরা বুঝতে পেরেছিলেন আর্নস ভেল গ্রাউন্ডের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন। নাজমুল এরপর বলেন, ‘প্রতিটি খেলোয়াড় বিশ্বাস করেছে এই রান ডিফেন্ড করা সম্ভব। সত্যি কথা। জিতে গেছি, সে জন্য বলছি না। বিরতির সময় খেলোয়াড়েরা আমরা যখন কথা বলেছি, সবার মধ্যে বিশ্বাস ছিল এই ম্যাচ আমরা জিততে পারি।’
নাজমুল এরপর বোলার ও ফিল্ডারদের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘এই কাজটা সহজ করে দিয়েছে বোলাররা। তানজিম খুবই ভালো শুরু করেছে পাওয়ারপ্লেতে। মোস্তাফিজ ১৯ নম্বর ওভার মেডেন (উইকেটও) নিয়েছে। ফিল্ডারদেরও প্রশংসা করব। তারা যেভাবে বাউন্ডারি সেভ করেছে, বিশেষ করে রিশাদ পয়েন্টে বেশ কয়েকটি ক্যাচ নিয়েছে।’
অ্যান্টিগায় ২১ জুন সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে সুপার এইটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।