ব্যাংকঋণের সুদ ১৩ শতাংশ ছাড়াল

0
113
টাকা

ব্যাংক খাতে নতুন ঋণের সুদহার ১৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে। নতুন এ সুদহার মার্চে নতুন ঋণের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। এ অবস্থায় বাড়তি সুদ কিছুটা কমাতে সুদহার নির্ধারণে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ভিত্তি সুদহারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া অতিরিক্ত সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সুদহার কমানোর এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি মাসের শুরুতে ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে দেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহার কিছুটা কমিয়েছে। কারণ, বর্তমানে যে পদ্ধতি মেনে সুদহার নির্ধারণ করা হয়, সেই পদ্ধতিতে ফেব্রুয়ারি শেষে মার্চের জন্য সুদের ভিত্তি হার প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ভিত্তি হারের সঙ্গে বাড়তি যে সুদ যুক্ত হয়, সেটি কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও ব্যাংকঋণের সুদহার মার্চে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশে। ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকঋণের সুদ ছিল ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত জুলাইয়ে ব্যাংকঋণ ও আমানতের ৯–৬ সুদহার তুলে নেওয়ার পর ব্যাংকের ঋণের সুদহার মার্চে এসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠছে।

ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারণে গত বছরের জুন থেকে স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের গড় সুদহারের ভিত্তিতে স্মার্ট বা ব্যাংকঋণের ভিত্তি সুদ নির্ধারিত হচ্ছে। প্রতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক স্মার্ট সুদহার প্রকাশ করে। এ স্মার্ট সুদহারের সঙ্গে বাড়তি ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ব্যাংকগুলো এত দিন ঋণের সুদ নির্ধারণ করে আসছিল। সর্বশেষ জানুয়ারি শেষে স্মার্ট সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি শেষে যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৬১ শতাংশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন ব্যাংকগুলো স্মার্ট হারের সঙ্গে বাড়তি যুক্ত করা যাবে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ। এত দিন যুক্ত করা হতো বাড়তি ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ। তবে প্রাক্‌-জাহাজীকরণ রপ্তানি ঋণ, কৃষি ও পল্লি ঋণের ক্ষেত্রে যুক্ত করতে পারবে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগে যা ছিল ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য মুদ্রানীতি কমিটির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নীতি সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব স্মার্টের ওপর ইতিমধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই ঋণের সুদহার মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা পালন করতে হবে।

ব্যাংক চাইলেই পুরোনো গ্রাহকদের কাছ থেকে এখনই বেশি সুদ নিতে পারবে না। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে। একাধিক ব্যাংকার জানান, স্মার্ট রেটের ভিত্তিতে বর্তমানে প্রতি মাসে যে সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, তা নতুন গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কখনো কখনো কার্যকর করা যাচ্ছে। কিন্তু পুরোনো গ্রাহকের বেলায় এ বাড়তি সুদহার তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয় না। কারণ, পুরোনো ঋণের সুদহার ছয় মাস পরপর সমন্বয় করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.