চার কোটি টাকা চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে হওয়া দুটি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে যশোরে নওয়াপাড়ার বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনিকে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে অভয়নগর আমলী আদালতের বিচারক জুবাইদা রওশন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর আদালতের কোর্ট পরিদর্শক রোকসানা খাতুন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খুলনা শহরের রোজ গার্ডেন হোটেল থেকে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইসঙ্গে তার সহযোগী চলিশিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য তুহিনকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারে পর জনিকে নিয়ে তার মালিকানাধীন নওয়াপাড়া ইকোপার্ক, বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযানে চালায় যৌথবাহিনী। এসময় দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, ছুরি, হাসুয়া ও বিভিন্ন ব্যাংকের বই এবং সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিক্স উদ্ধার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার অস্ত্র আইনে একটি মামলা ও স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী করা চাঁদাবাজির মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠায় অভয়নগর থানা পুলিশ।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, বৃহস্পতিবার আটক করা হলেও জনিকে নিয়ে দিনভর বিভিন্ন অভিযানে যায় যৌথবাহিনী। যেহেতু রাত হয়ে যায়; তাই আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলায় বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
প্রসঙ্গত, আসাদুজ্জামান জনি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর রাজনীতিক পটপরিবর্তনে দলীয় বিশৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর তার দলীয় পদ স্থগিত করা হয়।
দলীয় পদ স্থগিত থাকলেও নওয়াপাড়া দোদণ্ড্যপ্রতাপশালী ছিলেন আসাদুজ্জামান জনি। তার ভয়ে তটস্থ ছিল সবাই। শিল্প নগরী নৌ বন্দরের ব্যবসায়ীদের কাছে ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর অভয়নগরে নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে জনির কণা ইকো পার্কে বালুতে পুঁতে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েক দফায় ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন।
ঘটনার ১১ মাস পর চলতি বছরের ২ আগস্ট আসাদুজ্জামান জনিসহ ছয়জনের নামে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। একই অভিযোগ স্থানীয় সেনাক্যাম্পেও দেন ভুক্তভোগী নারী।