দেশে দেশলাইয়ের বাজারে একসময় ঢাকা ম্যাচ ও দাদা ম্যাচের বেশ কদর ছিল। কিন্তু এখন এই ম্যাচ বাজারে নেই। ঢাকা ম্যাচ ও দাদা ম্যাচ কারখানা বন্ধ। ঢাকা ম্যাচের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে গেছে। দাদা ম্যাচের অবস্থা আরও খারাপ, বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে গেছে।
ঢাকা ম্যাচ ও দাদা ম্যাচ নামের কারখানা দুটি ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠান। এই কোম্পানির ৩০ শতাংশের মালিকানা শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি)। বাকিটা অর্থাৎ ৭০ শতাংশ ভাইয়া গ্রুপের।
কারখানা দুটির মালিকানা একসময় পুরোটাই বিসিআইসির ছিল। বেসরকারি খাতে অংশীদারত্ব ছেড়ে দিয়েও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
সরকারি ও বেসরকারি যৌথ মালিকানার কোম্পানি ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ ২০০৫ সালে ঢাকা ম্যাচ কারখানা এবং ২০১০ সালে দাদা ম্যাচ বন্ধ
করে দেয়। বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুটি কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক চাকরি হারান। শ্রমিকদের একটি বড় অংশ এখনো তাঁদের পাওনা বুঝে পাননি।
দুটি কারখানার প্রায় ৩২ একর জমি রয়েছে। কারখানা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই জমি খুবই মূল্যবান। বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত। সেখানে অন্য কোনো কারখানা হতে পারে। এ জন্য দরকার উদ্যোগ। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সরকারি উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এত দিন দুটি কারখানা বন্ধ রাখা একেবারেই অযৌক্তিক। এভাবে ফেলে না রেখে কারখানা দুটির বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাকদা এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকা ম্যাচ কারখানা। ১৯৫৫ সালে প্রায় ১৪ একর জমির ওপর বেসরকারি উদ্যোগে কারখানাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উদ্যোক্তারা শ্রমিকদের আবাসনের জন্য পাঁচ একরের বেশি জমিতে একটি কলোনিও করেছিলেন। আর দাদা ম্যাচ কারখানার অবস্থান খুলনার রূপসা স্ট্র্যান্ড রোডে। ১৯৫৫ সালে রূপসা নদীর তীরে ১৭ দশমিক ৭৯ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠে এই কারখানা। এটিও ছিল বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত।
দেশে স্বাধীন হওয়ার পর কারখানা দুটি জাতীয়করণ করা হয়। পরিচালনার দায়িত্ব পায় বিসিআইসি। ১৯৮৪ সালে বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতির আওতায় ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড গঠন করা হয়। এই কোম্পানির অধীনে দেওয়া হয় ম্যাচ কারখানা দুটি। কোম্পানিটির ৩০ শতাংশ মালিকানা বিসিআইসির হাতে রেখে ৭০ শতাংশ বিক্রি করা হয় সুইডেনের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে।
ঢাকা ম্যাচ কারখানার শ্রমিক মো. নুরুল হক বলেন, সুইডিশ কোম্পানিটি কারখানা পরিচালনার সময় শ্রমিকদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু দেশের কিছু প্রতিষ্ঠান চক্রান্ত করে তাদের চলে যেতে বাধ্য করেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯৮৯ সালে সুইডিশ কোম্পানি কারখানা দুটিতে তাদের মালিকানার অংশ বিক্রি করে দেয়। এরপর তা কিনে নেয় ভাইয়া গ্রুপ। তারা ১৯৯৩ সালে আবার কারখানা দুটি চালু করে। তারা ২০০৫ সালে ঢাকা ম্যাচ ও ২০১০ সালে দাদা ম্যাচ বন্ধ করে দেয়। শিল্প মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে কারখানা দুটি সিলগালা করে দাদা ম্যাচের দেখভালের দায়িত্ব দেয় জেলা প্রশাসনকে। আর ঢাকা ম্যাচ কারখানার নিয়ন্ত্রণ এখনো কোম্পানির কাছেই রয়েছে।
দাদা ম্যাচের যে অবস্থা
২০১১ সালের ২১ মার্চ দাদা ম্যাচ ওয়ার্কসের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দায়িত্ব নেয় খুলনা জেলা প্রশাসন। তখন কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খুলনা মহানগর পুলিশের চার-পাঁচ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়। অবশ্য এখন আর পুলিশের পাহারা নেই। ফলে এখন অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় আছে কারখানাটি।
শিল্প মন্ত্রণালয়কে গত বছরের আগস্টে চিঠি দিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসন জানায়, নিয়মিত পুলিশ বা নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় কারখানা থেকে মূল্যবান মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে চুরির কয়েকটি অভিযোগ তাঁদের কাছে এসেছে। এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। বড় এই কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সক্ষমতা জেলা প্রশাসনের নেই। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থায়ীভাবে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ জরুরি।
তবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের ওপরই রয়েছে।
সরেজমিনে গত ২৫ এপ্রিল দেখা যায়, কারখানার মূল ফটকের সামনে মরচে ধরা অস্পষ্ট একটি সাইনবোর্ড। এতে লেখা ‘ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লি.। ইউনিট: দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি।’ পাশে জোড়া বাঘ মার্কা দেশলাইয়ের একটি ছবি। আরও দেখা যায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় দাদা ম্যাচ কারখানা ঝোপজঙ্গলে ঢেকে গেছে। বিশাল এলাকাজুড়ে কারখানা ভবনের বিভিন্ন ইউনিট। বড় বড় ভবনের দরজা-জানালা নেই বললেই চলে। কারখানার ছোট-বড় কোনো যন্ত্র চোখে পড়েনি। জরাজীর্ণ কয়েকটি গুদামে পড়ে আছে হাজার হাজার দেশলাইয়ের প্যাকেট। একসময় মজুত থাকা কিছু নষ্ট রাসায়নিকের বস্তাও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। একটি ভবনের পাশে পড়ে আছে চার-পাঁচটি অকেজো গাড়ি।
দাদা ম্যাচ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি শাহজাহান জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চোখের সামনে দিনের পর দিন সব চুরি হয়ে গেল। কষ্ট লাগে। কোটি কোটি টাকার জিনিস চুরি হয়েছে। দেখার কেউ নেই।’
কারখানাটিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় খুনের ঘটনাও ঘটেছে। গণমাধ্যমের খবর ও কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১০ এপ্রিল কারখানা এলাকার ভেতর থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কারখানার যন্ত্রপাতি চুরিকে কেন্দ্র করে এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ‘আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে নিরাপত্তারক্ষী চেয়েছি। সীমানাপ্রাচীর সংস্কারে অনুরোধ জানিয়েছি।’
ঢাকা ম্যাচ যেভাবে আছে
ঢাকা ম্যাচ সিলগালা করা হলেও নিয়ন্ত্রণ ছাড়েনি কোম্পানি। এখনো সেখানে ১৩ নিরাপত্তাপ্রহরীসহ ১৭ জনবল রয়েছেন। এখানে মালামাল ও যন্ত্রপাতি এখনো মোটামুটি অক্ষত আছে। আর ভাইয়া গ্রুপ ঢাকা ম্যাচকে ঋণ হিসেবে অর্থ দিয়ে জনবলের বেতনের ব্যবস্থা করছে।
সরেজমিন গত ২৪ এপ্রিল দেখা যায়, এই কারখানার প্রধান ফটকের অবস্থা বেশ জরাজীর্ণ। ফটকের কোথাও কারখানার নাম নেই। তবে বন্ধ ফটকের পাশে কারখানার অধীনে একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের ফটক দিয়েই কারখানায় যাতায়াত করতে হয়।
কারখানার ভেতরে ঢুকলে বাঁ পাশে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস। ডান পাশে একটি লোহার ফটকে লেখা, ‘ঢাকা ম্যাচ’। ফটক দিয়ে ঢুকলেই উৎপাদন ইউনিট। এই ইউনিটের দেয়াল ও ভেতরে আগাছা গজিয়েছে। টিনের চাল কোথাও ভেঙে পড়েছে, কোথাও ফুটো হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় যন্ত্রপাতি সব অকেজো। বিশাল জায়গাজুড়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে গুদাম, বাংলো, ক্যানটিনসহ বিভিন্ন স্থাপনা। কোথাও কোথাও দেয়াল ভেঙে পড়েছে। বুড়িগঙ্গার তীরের এই বিশাল এলাকা এখন অনেকটা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
পাওনা বুঝে পাননি শ্রমিকেরা
ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি হুট করে কারখানা দুটি বন্ধ করে দিলেও এখনো কর্মীদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়নি। ঢাকা ম্যাচের শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সময় কয়েক হাজার শ্রমিক ছিলেন। যেসব শ্রমিকের পাওনা কম ছিল, তাঁরা অনেকেই পেয়েছেন। তবে যাঁদের বেশি ছিল, তাঁরা পাননি।
কারখানার কাছেই শ্রমিকদের কলোনি। সেখানে শ্রমিকেরা নিজেদের মতো করে পাকা, আধা পাকা ঘর তুলেছেন। সেখানে কথা হয় মো. নুরুল হকের সঙ্গে। তিনি ঢাকা ম্যাচে ১৯৭৯ সালে যোগ দেন। নুরুল হক বলেন, ‘কারখানা বন্ধের পর দুই দফায় প্রায় ২০ হাজার টাকা পেয়েছি। ১৫ বছর পার হয়ে গেলেও বাকি এক লাখ টাকা ওরা দেয়নি।’
একই অবস্থা খুলনার দাদা ম্যাচের। শ্রমিকদের এখনো সব পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। কারখানার কলোনিতে এখনো ৬৫টি পরিবার বসবাস করছে। কারখানার একবারে শেষ প্রান্তের পুকুর পাড়ে বর্তমানে তিনটি পরিবার বসবাস করছে। সেখানে কথা হয় ফিরোজা জামানের সঙ্গে। তাঁর স্বামী শাহীদুজ্জামান কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ছিলেন। ফিরোজা বলেন, ‘কারখানা থেকে কিছুই পাইনি। পাওয়ার আশাও নেই। কোনো উপায় না পেয়ে এখানেই থাকছি।’
চাকরি হারিয়ে, পাওনা না পেয়ে অনেকেই কষ্টে দিন পার করছেন। কেউ কেউ দিনমজুরের কাজ করছেন, কেউবা ভ্যান-রিকশা চালাচ্ছেন। কারখানার শ্রমিক রোজী বেগম ও শাহিন আরা রহমান। তাঁরা বলেন, এই কারখানায় চালসমান উঁচু যন্ত্রপাতি ছিল। দেখলে ভয় লাগত। মিলে যা ছিল, তা ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দিলেও ৫০০ শ্রমিকের বকেয়া দিতে পারত কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক মো. মাসুদ খান দাবি করেন, শ্রমিকনেতাদের বাধার কারণে দাদা ম্যাচ কারখানার সব শ্রমিককে পাওনা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ‘এখন সরকার দুটি কারখানার সবকিছু আমাদের বুঝিয়ে দিলে আমরা শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেব।’
মন্ত্রণালয় ও কোম্পানি যা করছে
ঢাকা ম্যাচের জায়গায় একটি বহুমুখী জেটি নির্মাণ ও দাদা ম্যাচের জায়গায় প্যাকেজিং (মোড়কজাত) কারখানা করার প্রকল্প প্রস্তাব শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসচিব মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, ‘কোম্পানি প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেছি। তারা সম্ভাব্যতা যাচাই না করে দেওয়া পর্যন্ত কী হবে না হবে, তা বলা যাচ্ছে না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাচ ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক মো. মাসুদ খান বলেন, মন্ত্রণালয়ের শর্ত মেনে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গেলে এক কোটি টাকার মতো লাগবে। অনিশ্চিত প্রকল্পে এক কোটি টাকা খরচ করার মতো অবস্থা প্রতিষ্ঠানের নেই। তাই কোম্পানির পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, অনিশ্চিত প্রকল্পে এত টাকা খরচ করা যাবে না বলে পরিচালনা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মাসুদ খান আরও বলেন, তাঁরা শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চান না। তাঁরা মন্ত্রণালয়কে বলেছেন, হয় সরকার ভাইয়া গ্রুপের ৭০ ভাগ শেয়ার নিয়ে যাক, অথবা তাদের ৩০ ভাগ শেয়ার কোম্পানিকে দিয়ে দিক। কারণ, তাদের সঙ্গে কাজ করতে গেলে সামান্য সিদ্ধান্তের জন্যও বছরের পর বছর ঘুরতে হয়।
‘তিন পথ খোলা’
সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, ওই দুটি কারখানার জায়গায় কোন শিল্প করলে লাভজনক হবে, তার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই দরকার। দুই পক্ষকেই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য খরচ দিতে হবে। তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের হাতে এখন তিনটি পথ খোলা আছে বলে উল্লেখ করেন—১. বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩০ ভাগ সম্পত্তি বর্তমান বাজারমূল্যে বিক্রি করে দিতে পারে মন্ত্রণালয়। ২. বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় কাজ করতে পারে। ৩. মন্ত্রণালয় অন্য অংশীজনও খুঁজতে পারে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যেভাবেই হোক, এভাবে ফেলে না রেখে কারখানা দুটি চালু করা প্রয়োজন।