বেনজীরের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ

0
78
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ
সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর সম্পদ কেনার ৮৩টি দলিল জব্দেরও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
 
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
 
সূত্রে জানা গেছে, আদালতে দেওয়া আবেদনে বলা হয়, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পদ জব্দ ও ফ্রিজ না করা গেলে, যেকোরো সময় তা হস্তান্তর হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না।
 
শুনানির পর আদালতের দেওয়া আদেশে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুদক বিধিমালা ২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী, সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হলো। আবেদন অনুযায়ী ৮৩টি জমির দলিল ও ২৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ মোট ৩৩টি অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
 
দুদক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ জব্দের জন্য আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম। আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় দুদকের পক্ষে আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
 
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদে।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক।
 
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের অঢেল সম্পদের মধ্যে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
 
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
 
অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।
 
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি পাঠিয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনও জানান, বেনজীর আহমেদ তার পদের অপব্যবহার করে তার আয়ের তুলনায় প্রতিবেদনে উল্লিখিত সম্পত্তিগুলো অধিগ্রহণ করেছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক এই মহাপরিদর্শক, তার স্ত্রী, বড় মেয়ে এবং ছোট মেয়ের নামে থাকা অঢেল সম্পদ কীভাবে অর্জিত হয়েছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে অনুরোধ করেছেন তিনি।#বাজেয়াপ্ত #বেনজীরআহমেদ #বাংলাদেশ #explore #everyone

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.