বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে, বেরিয়ে আসছে ‘থলের বিড়াল’

0
60
সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ
জমি দখলসহ বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে অভিযুক্ত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
 
রোববার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান শেষ হলে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এরপর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
 
দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেনজীর, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এরমধ্যে বেনজীরের নামে প্রায় ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার সম্পদ, তার স্ত্রী জিসান মির্জার নামে ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা, তাদের বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে ৮ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসার নামে প্রায় ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা পাওয়া গেছে।
 
খুরশিদ আলম খান বলেন, ইতোমধ্যে আরেকটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুদক। এর জন্য তাদেরকে ২১ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।
 
তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
 
দুদকের একজন কর্মকর্তা জানান, বেনজীরের স্থাবর-অস্থাবর প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
 
এদিকে, আদালতের নির্দেশে ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ২৪ কাঠা জমির ওপর বেনজীরের দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়িটি জব্দ করে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নেওয়া হচ্ছে।
 
এ ছাড়া গোপালগঞ্জে বিশাল এলাকাজুড়ে রিসোর্ট, রাজধানীর গুলশানে ১০ হাজার বর্গফুটের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট (চারটি ফ্ল্যাট একসঙ্গে), বান্দরবানে ২৫ একর বাগানবাড়িতে রিসিভার নিয়োগ দিয়ে তত্ত্বাবধানে নেয় প্রশাসন।
 
গত ৩১ মার্চ থেকে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ অনুসন্ধান শুরু হলে গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগ করেন বেনজীর।
 
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেনজীর আহমেদ, স্ত্রী জিসান মীর্জা ও তিন মেয়ের নামে ২০৫টি দলিলে ৭০২ বিঘা জমি (৩৩ শতকে এক বিঘা হিসাবে), ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ২৫টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে বলে সন্ধান পায় দুদক। এরপর গত ২৩ ও ২৬ মে এবং ১২ জুন আদালতের নির্দেশে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়। ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এসব সম্পত্তি গড়েন বেনজীর।
 
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পান বেনজীর। এরপর ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী অবসরে যান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.