চেন্নাইয়ে স্পিনাররাই ফেভারিট

0
103
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে অনুশীলনে মুশফিকুর রহিম

কেন উইলিয়ামসনকে পেয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করার একটা সুযোগ পেয়ে গেলেন। তাঁর চোট পরিচর্যা, খেলার সম্ভাবনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন হলো। সংবাদ সম্মেলনটা বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের কিনা, বোঝা যাচ্ছিল না। অনেক পরে গিয়ে তিন-চারটি প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের পক্ষে। কিউই অধিনায়ক ভালো ছেলের মতো বিনয়ের অবতার হয়ে উত্তর দিলেন– যে কোনো দলই জিততে পারে বিশ্বকাপ ম্যাচ। নিজেদের দিনে যে কেউ জিততে পারে, কথা সত্য। যদিও ভারত বিশ্বকাপে গতকাল পর্যন্ত কোনো অঘটন দেখা যায়নি। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা দলগুলো জিতেছে। সেদিক থেকে দেখলে আজকের ম্যাচের ফেভারিট তো নিউজিল্যান্ড।

গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ তারা। ফেভারিটের তকমা নিয়ে খেলছে চলমান বিশ্বকাপেও। ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে তারা। এদিক থেকেও এক ম্যাচ জয়ী বাংলাদেশের বিপক্ষে ফেভারিট নিউজিল্যান্ড। তবে রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে কোনো দল জিতেছে, আজ পর্যন্ত তা শোনা যায়নি। জিততে হয় নির্দিষ্ট দিনে সেরা ছন্দ দেখিয়ে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান জোড়া সেঞ্চুরি করে যেমন দেখিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে কিউইদের বিপক্ষে। আজ চেন্নাইয়ে জোড়া সেঞ্চুরি না হোক, সাকিব বা মিরাজের পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিও টাইগারদের দেখাতে পারে জয়ের বাতিঘর। হাথুরুসিংহে গতকাল একবার মিডিয়া সেন্টারে বাঁধিয়ে রাখা একটি পুরোনো পেপার কাটিং দেখে গেলে ভালো করতেন। গেম প্ল্যানে স্পিনার বেশি রাখার ব্যাপারে উৎসাহ পেতেন। ভারতের একটি ইংরেজি দৈনিকের হেড লাইন ছিল এমন– ‘স্পিনারস হেল্প ইন্ডিয়া ফাইট ব্যাক।’ অর্থাৎ স্পিনাররা ভারতকে লড়াইয়ে ফিরতে সাহায্য করেছেন। বাংলাদেশের বোলিং শক্তি এখনও স্পিনে।

চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বর্তমান দলের কারও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তবে জাতীয় দলের সঙ্গে রয়েছেন এমন দু’জন সাবেক ক্রিকেটার– টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু খেলেছেন ১৯৯৮ সালে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে। কেনিয়ার কাছে ২৮ রানে হারের সে ম্যাচে পেস-স্পিনের সমন্বয় ছিল। টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্য হিসেবে তারাও ক্রিকেটারদের তথ্য দিতে পারেন। যদিও আইপিএলের সুবাদে চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা আছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। তাদের অভিজ্ঞতা টাটকা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গেম প্ল্যানে বেশি কার্যকর বার্তা দিতে পারেন তারা। এ ছাড়া পরামর্শক কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম তো রয়েছেনই। বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত গতকাল জানান, ভারতীয় এ কোচ ব্যাটার ও বোলারদের প্রচুর তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন ধর্মশালায়। চিদাম্বরম স্টেডিয়াম নিয়ে হয়তো কিছুটা বেশি তথ্য পাওয়া যাবে তাঁর কাছ থেকে। যদিও বেশি খেলার অভিজ্ঞতা বিবেচনা করা হলে নিউজিল্যান্ডের ধারেকাছে থাকবে না বাংলাদেশ। কারণ নিউজিল্যান্ড দলের ছয় থেকে সাতজন ক্রিকেটার নিয়মিত আইপিএল খেলেন। ভারতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার অভিজ্ঞতাও বেশি। কেন উইলিয়ামসনদের অভিজ্ঞতার কাছে সাকিবদের অভিজ্ঞতা সামান্য। এই বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে খেললে জেতা কঠিন। জিততে হলে সাকিবদের খেলতে হবে দলগতভাবে।

নিউজিল্যান্ড তিন দিনের বিরতি পেয়ে সতেজ। বুধবার কৃত্তিম আলোয় অনুশীলন করেছে তারা। গতকাল ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বে। বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও ক্রিকেটারদের অনুশীলন না করার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। তবে সাকিব, মুস্তাফিজ, লিটন ছাড়া বাকি সবাই অনুশীলন ছিলেন। কেউ ফিল্ডিং, কেউ নেটসেশনে ফোকাস দেন। যদিও অনুশীলন দেখে এখন আর একাদশ নির্বাচনের বিষয়টি ঠিক করা হয় না। নিয়মিত খেলোয়াড়দের তালিকায় রেখে বাকিদের বেছে নেওয়া হয়। কন্ডিশন বিবেচনায় এ ম্যাচের একাদশে একাধিক পরিবর্তন করা হতে পারে। মাহমুদউল্লাহকেও ফেরানো হতে পারে কিউইদের বিপক্ষে। কারণ বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো কিছু রেকর্ড আছে তাঁর। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ আর ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেঞ্চুরি ইনিংস খেলেছেন তিনি। আরেকবার দেখিয়ে দিতে সুযোগের অপেক্ষায় আছেন মিডল অর্ডার এ ব্যাটার। টিম ম্যানেজমেন্ট মিডল অর্ডার এ ব্যাটারকে সে সুযোগ দেবে কিনা, জানা নেই। কারণ তিন পেসার নিয়ে খেলতে গেলে একাদশে ভারসাম্য রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। গত দুই ম্যাচে পেস বোলাররা ব্রেকথ্রু দিতে না পারায় স্লো উইকেটে পেস ইউনিটেও ওলটপালট করে যেতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.