দুর্দান্ত ক্রিকেট গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু অজিদের কাছে হেরে ফাইনাল খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয় প্রোটিয়াদের। এরপর গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শিরোপার খুব কাছে থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাদের। একই আক্ষেপ নিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে থেকেও বিদায় নিয়েছে প্রোটিয়ারা।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৫০ রানে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে আইসিসি ইভেন্টের নকআউট পর্বে হারার অভ্যাস অব্যাহত রেখেছে তারা। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৭ বছর হতে চললেও আর কোনো আইসিসি ট্রফি জিততে পারেনি তারা।
এদিকে ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি নিউজিল্যান্ডে। এবার আরও একটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে কিউইরা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত। এর আগে ২০২১ সালে বিশ্বটেস্ট চ্যাম্পিয়ন শিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল নিউজিল্যান্ড।
বুধবার (৫ মার্চ) আগে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৬৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১২ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে ৫০ রানের জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২ বলে ১৭ রান করে শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন রায়ান রিকেলটন। তবে ভেন ড্যার ডুসেনকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন টেম্বা বাভুমা।
৬৪ বলে বাভুমা ও ৫১ বলে ফিফটি তুলে নেন ডুসেন। দুজনের ব্যাটে ভর করে ১০০ রানের কোটা পার করে প্রোটিয়ারা। ৭১ বলে ৫৬ রান করে আউট হন বাভুমা। তবে ব্যাট চালাতে থাকেন ডুসেন। কিন্তু ৬৬ বলে ৬৯ রান করে বোল্ড আউট হন ডুসেন। ৬ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন ক্লাসেনও। এতে ছন্দ হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দলের হাল ধরার চেষ্টা করে এইডেন মারক্রাম। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ২৯ বলে ৩১ রান করে ফেরেন এই ডান হাতি ব্যাটার। এরপর মুল্ডার (৮) এবং ইয়ানসেন ৩ রানে আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে থাকেন ডেভিড মিলার।
মারকুটে ব্যাট করতে ৬৭ বলে মিলার সেঞ্চুরি তুলে নিলেও হার এড়াতে পারেনি প্রোটিয়ারা। নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১২ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে ৫০ রানের জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন মিচেল স্যান্টনার। এ ছাড়া ম্যাট হেনরি ও গ্লেন ফিলিপস দুটি করে, আর মিচেল ব্রাসওয়েল ও রাচিন রাবিন্দ্রা নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৮ রানের জুটি করেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার উইল ইয়াং ও রাবিন্দ্রা। ২১ রানে ইয়াং আউট হলে রাবিন্দ্রাকে সঙ্গ দেন কেন উইলিয়ামসন।
দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৪ রানের জুটি করেন রাবিন্দ্রা ও উইলিয়ামসন। শেষ পর্যন্ত দুজনই হাঁকান সেঞ্চুরি। ১০১ বলে ১০৮ রান (১৩ চার ও ১ ছক্কায়) করেন রাবিন্দ্রা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি। উইলিয়ামসন খেলেন ৯ বলে ১০২ রানের (১০ চার ও ২ছক্কা) ইনিংস। ডানহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটারের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৫তম সেঞ্চুরি এটি।
এর বাইরে ৪৯ রান করে নেন ড্যারিল মিচেল (৩৭ বলে) ও গ্লেন ফিলিপস (২৭ বলে)। ১৬ রানের সংযুক্তি ছিল মাইকেল ব্রাসওয়েলের ব্যাট থেকে। এতেই ৩৬২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ডের।