এবার কী সারপ্রাইজ দিলেন?
আমার ছোট বোনের নাম সামিরা রাকা। তাকে বলেছিলাম শুটিংয়ে বাইরে যাচ্ছি, একসঙ্গে জন্মদিন পালন করা হচ্ছে না। বাসার সবাই বিশ্বাস করেছিল। বাইরে একটি মিটিং শেষে, রাত ১২টা বাজার ৩ মিনিট আগে বাসায় ঢুকে সবাইকে সারপ্রাইজ দিয়েছি। ঘুমের মধ্যে আমার ছোট বোনকে জড়িয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি, সে ভয়ে চিৎকার করে উঠেছে। পরে কেক কেটেছি। ইচ্ছা আছে তার সঙ্গে ঘুরতে বের হওয়ার। প্রতিবার আমরা রাস্তার অনেক মানুষদের খাবার দিই।
একসময় নিয়মিত অভিনয় করতেন, মাঝে দীর্ঘ বিরতি দিয়েছিলেন কেন?
একদিন বাবা বললেন, পড়াশোনা ঠিকমতো করো। মূর্খ হয়ে থাকলে জীবনে বড় হতে পারবে না। জীবনটাও সুন্দর হবে না। বাবা কিছুটা রাগী ছিলেন, তবে সব সময় যুক্তি দিয়ে কথা বলেন। তখন আমি অভিনয় অনেকটা ছেড়েই দিয়ে ফ্যাশনের ওপর পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। পরে শিক্ষকতায় যোগ দিই। সাড়ে পাঁচ বছর অভিনয়, মডেলিং থেকে দূরে ছিলাম।
অভিনয়ে ফেরার টান অনুভব করলেন কীভাবে?
মন থেকে ভালোবাসা ছিল অভিনয়ের প্রতি। অভিনয়কে অনেক মিস করতাম, মনে হতো কিছু একটা নেই। মাঝে হতাশও লাগত। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম ফ্যাশন নিয়ে আপাতত কাজ করব না। অভিনয়ই করতে হবে। এখন মানসিক শান্তি পাচ্ছি। অভিনয়কে প্রায়ই বলি, অনেক ভালোবাসি আর কখনোই গুডবাই বলব না।
লারা লোটাস হিসেবে দর্শকদের কাছে আপনার একটা জায়গা ছিল, ফেরার সময় কি মনে হয়েছিল আগের জায়গায় যেতে পারবেন কি না?
আমাকে নতুন করেই শুরু করতে হয়েছে। ভাবনা ছিল, বিরতির জন্য দর্শক হয়তো আমাকে মনে রাখেনি। এবারের সংগ্রামটা ছিল অন্য রকম। দুই বছর পরে এখনকার মতো নিয়মিত কাজ পেতে অনেক বাধা পেরিয়ে আসতে হয়েছে। কিন্তু আত্মবিশ্বাস ছিল, আবার সেই লারা লোটাস ফিরে আসবে। এখন আমি পুরোপুরি অভিনয় নিয়েই আছি। সবাইকে বলার মতো অনেক কাজ এখন আমার হাতে রয়েছে। অভিনয় থেকে ভালো লাগা, অর্থ, সম্মান সবই পাচ্ছি।
এখন কী কী কাজ করছেন?
আমি নীরবে কাজ করে গিয়েছি। অনেক কাজই করেছি, যা বলার মতো না। আমার সঙ্গে যায় না, এমন গল্পেও কাজ করেছি। কারণ, তখন আমি নিয়মিত হতে চেয়েছি। বর্তমানে ঝড়ের পাখি, রোমান্টিক বাড়িওয়ালাসহ বেশি কিছু ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। একক নাটক করছি। মূলধারার একটি সিনেমার শুটিং শেষ করেছি। একটি ওয়েব সিরিজ করেছি। বেশ কিছু অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করছি। সামনে ভালো কাজের সংখ্যা বাড়বে।
আপনার আয়ের টাকা দিয়ে কী করেন?
বাবা–মায়ের কাছে কৃতজ্ঞ তাঁরা আমাদের পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন। জীবনের সব ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছেন। সঠিক পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরাই আমার মেন্টর। আমার আয়ের টাকা মায়ের হাত দিই।
জন্মদিনে জীবন নিয়ে কোনো উপলব্ধি হলো?
জীবন থেকে একটা বছর চলে গেল, একসময় এটা শুনলে অদ্ভুত লাগত। এখন মনে হয় আসলেই জীবন থেকে এক বছর চলে গেল। মনে প্রশ্নে জাগে, এই এক বছরে কী করলাম। নিজেকে নতুন কী দিতে পারলাম।
প্রেম করেন?
না, আমার কোনো প্রেম–ভালোবাসা নেই। আমি সিঙ্গেল। তবে বিয়ের পক্ষে। বাবা–মায়ের পছন্দেই বিয়ে করব। করোনার মধ্যে পরিবার থেকে বিয়ের কথা বলা হয়েছিল। তখন লক্ষ করলাম, ছেলেরা আমাকে দেখে অনেকেই বিয়ের জন্য পছন্দ করে বসে আছেন। বিয়ে শিগগিরই হয়ে যাবে। সবাইকে জানিয়েই করব।