বিশ্বসেরা হতে চায় দাবা প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া পাবনার সাঁথিয়ার মেহজাবিন আক্তার জুবাইদা। পঞ্চাশতম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৩ এ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুবাইদা দাবা খেলায় অংশগ্রহণ করে জাতীয় পর্যায়ে দেশসেরা হয়েছে। জুবাইদা সাঁথিয়া পৌরসভাধীন দৌলতপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন এবং গৃহিনী সিমা খাতুন দম্পতির তৃতীয় সন্তান।
জানা গেছে, সিলেট আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩০সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাবা খেলা চলে। জুবাইদা চার দিন যাবৎ চলা এ খেলায় অংশগ্রহণ করে প্রতিটি রাউন্ডে প্রথম হয়ে এ বিজয় অর্জন করে। গত ১অক্টোবর সিলেটে সে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, মেডেল ও সনদপত্র গ্রহণ করে।
২০১৭ সালে সাঁথিয়া উপজেলা পর্যায়ে এবং পাবনা জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন জুবাইদা। পরবর্তীতে ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি। এছাড়া আঞ্চলিক পর্যায়েও (দুই বিভাগের সমন্বয়ে একটি অঞ্চল হয়) সে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল।
জুবাইদা জানায়, প্রথমত আমি শখ করে দাবা খেলা শুরু করি। এরপর চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। আমার স্বপ্ন আমি দাবা খেলায় বিশ্বসেরা হতে চাই এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নত শিখরে তুলে ধরতে চাই। সেজন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা চাই।’
জুবাইদার মা সিমা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে দেশ সেরা হবে এটা ভাবতেই পারিনি। মেয়ের বিজয়ে আমরা অনেক খুশি। আমার মেয়েকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। আশা করি আমার মেয়ে শুধু দেশসেরা নয় একদিন বিশ্বসেরারাও হবে।
জুবাইদার বাবা মোক্তার হোসেন জানান, জুবাইদাকে আমি নিজেই দাবা খেলা শিখিয়েছি। তৃতীয় শ্রেণী থেকেই সে দাবা খেলে। আমার বড় ছেলে বুয়েটে এবং মেজ মেয়ে ঢাকার বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজে পড়ালেখা করে। জুবাইদা সবার ছোট এবং লেখাপড়ায় সে অনেক ভালো। পড়ালেখার পাশাপাশি সে দাবা খেলা অনুশীলন করে। ওর সফলতায় আমরা অনেক খুশি। মেয়েকে নিয়ে আমার স্বপ্ন সে যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেরা দাবারু হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শিহাব উদ্দিন বলেন, জুবাইদা আমার বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রী। তার এই অর্জনে আমরা খুশি। সে আমার প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জল করেছে। সে আমাদের এলাকার গর্ব। জুবাইদার খেলার ব্যাপারে আমরা তাকে বিভিন্ন সময় উৎসাহ দিয়েছি। ভবিষ্যতে আরো ভালো করার জন্য দোয়া রইলো।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ হোসেন বলেন, জুবাইদার সফলতায় আমাদের উপজেলা পরিষদের সকল দপ্তর তথা সাঁথিয়াবাসী গর্বিত। তার সফলতার বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে যাতে তারাও জুবাইদার মত প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারে। জুবাইদা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যেন বাংলাদেশের গৌরবময় সাফল্য বয়ে আনতে পার এবং কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে পারে সে জন্য তাকে বিদ্যালয় এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।