বেইজিংয়ের জন্য ওয়াশিংটন একটি ‘হুমকি’ বলে স্বীকার করে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ মাত্র কয়েক দিন আগে তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সিবিএস নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন সব সময় আমাদের ওপর নজরদারি করছে।’
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকেই চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ গ্রিড ও পানি সরবরাহব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে আসছে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন মেধাস্বত্ব ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগও তারা করেছে।
এবার ট্রাম্পও চীনের নজরদারির বিষয়টি স্বীকার করে নিলেন।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরাও তাদের জন্য হুমকি। আপনি যেসব বিষয় নিয়ে বললেন, তার অনেক কিছু আমরাও তাদের ক্ষেত্রে করি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘দেখুন, এটা খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্ব, বিশেষ করে যখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিষয় আসে। আমরা সব সময় তাদের ওপর নজর রাখছি এবং তারা সব সময় আমাদের ওপর নজর রাখছে। এখন পর্যন্ত, আমি মনে করি, আমরা খুব ভালোভাবে মিলেমিশে আছি। আর আমি মনে করি, তাদের হটিয়ে দেওয়ার বদলে তাদের সঙ্গে কাজ করে আমরা আরও বড়, আরও ভালো এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারব।’
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকেই চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ গ্রিড ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে আসছে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন মেধাস্বত্ব এবং নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগও তারা করেছে।
চীনের পারমাণবিক অস্ত্র
ট্রাম্প চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বেইজিং দ্রুত তাদের অস্ত্রভান্ডার বাড়াচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘দেখুন, অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে আমাদের হাতে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। রাশিয়া আছে দ্বিতীয় স্থানে। চীন তৃতীয় স্থানে, যদিও তারা এখনো অনেক দূরে আছে, কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যে তারা সমান অবস্থানে পৌঁছে যাবে। আপনি জানেন, তারা দ্রুত এগুলো তৈরি করছে এবং আমি মনে করি আমাদের নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কিছু করা উচিত।’

ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ‘নিরস্ত্রীকরণ’ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘নিরস্ত্রীকরণ খুব বড় বিষয়। আমাদের কাছে এমন পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র আছে, যা দিয়ে আমরা বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করতে পারি। রাশিয়ার কাছে প্রচুর পারমাণবিক অস্ত্র আছে, আর চীনেরও অনেক হবে। তাদের কিছু আছে। তাদের যথেষ্ট আছে।’
চীন তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। তাদের ক্ষমতা হলো বিরল খনিজ, কারণ, তারা এটি দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে সঞ্চয় করছে এবং সত্যিই এর যত্ন নিচ্ছে।
কয়েক দিন আগে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাঁর ওই আদেশের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন ও রাশিয়াও তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করছে। শুধু আপনি তা জানতে পারছেন না।’
ওয়াশিংটনের চেয়ে এগিয়ে বেইজিং
ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছে। তবে তিনি এও স্বীকার করেছেন, বিরল খনিজ বিষয়ে ওয়াশিংটনের চেয়ে বেইজিং অধিক ক্ষমতাধর অবস্থানে আছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছি। আর হঠাৎই তারা বলেছে, আমাদের (চীনের) পাল্টা প্রতিরোধ করতে হবে। তাই তারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। তাদের ক্ষমতা হলো বিরল খনিজ। কারণ, তারা এটি দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে সঞ্চয় করছে এবং সত্যিই এর যত্ন নিচ্ছে।’
চীন ও রাশিয়াও তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করছে। শুধু আপনি তা জানতে পারছেন না।
কম্পিউটার থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি—সব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিরল খনিজের প্রয়োজন পড়ছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা সেটি (বিরল খনিজ) আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে আর আমরা অন্য কিছু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছি। উদাহরণস্বরূপ, উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ। এটা একটি বড় বিষয়। তাদের কাছে শত শত বোয়িং উড়োজাহাজ আছে। আমরা তাদের যন্ত্রাংশ দিইনি। আমরা উভয়ই হয়তো কিছুটা অযৌক্তিকভাবে কাজ করেছি। তবে মূল বিষয়টি হলো, শেষ পর্যন্ত আমাদের হাতিয়ার ছিল শুল্ক।’


















