সৌদি আরবের কাছে হেরে যাওয়ার পর আর্জেন্টিনার শেষ ষোলোতে ওঠা নিয়ে শঙ্কা দেখছিলেন অনেকেই। বিশেষ করে, গ্রুপ পর্বের প্রথম রাউন্ডে মেক্সিকো-পোল্যান্ড ম্যাচটি ড্র হওয়ার পর বড় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা।
মেক্সিকোর বিপক্ষে জিতে সেই শঙ্কা অনেকটাই দূর হয়েছে। আর মহাকষ্টের তিনটি দিন কাটিয়ে মার্তিনেজের কণ্ঠে এখন আত্মবিশ্বাস। ম্যাচ শেষে যেন হুঙ্কারই দিলেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার-বিশ্বকাপ ছেড়ে আমরা কোথাও যাচ্ছি না!
এই হুঙ্কারের মর্মার্থ একটাই—শেষ ষোলোর আগে ছিটকে পড়া তো পরের কথা, ট্রফি জিতেই বাড়ি ফিরবে আর্জেন্টিনা! ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্তিনেজ বলেছেন, ‘তারা (সৌদি আরব) আমাদের কঠিন একটি ম্যাচ উপহার দিয়েছে। কিন্তু ১০ নম্বর (লিওনেল মেসি) সঙ্গে থাকলে সবকিছুই সহজ হয়ে যায়।’ মার্তিনেজ এরপর যোগ করেন, ‘ওই তিনটি দিন খুব কঠিন ছিল। একে তো অপরাজেয় যাত্রায় ছেদ পড়েছে, এর ওপর বিশ্বকাপটা শুরু হয়েছে পেছনের পায়ে।’
মেক্সিকোর বিপক্ষে বাঁচা–মরার লড়াইয়ে লম্বা সময় ভুগেছে আর্জেন্টিনা। ৬৪ মিনিটে অসাধারণ এক গোলে সবার মনে স্বস্তি ফেরান লিওনেল মেসি। এরপর এনজো ফার্নান্দেজের ৮৭ মিনিটের গোলে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।
দলের দ্বিতীয় গোলটির পর একটু যেন আবেগীই হয়ে পড়েছিলেন মার্তিনেজ, ‘আজ (গতকাল) দ্বিতীয় গোলের পর আমি তো প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলাম। আমি সব সময়ই চাপ নিয়ে খেলি। আমি বিশ্বের সেরা লিগে খেলি। একটি কোপা আমেরিকা খেলেছি। ওয়েম্বলিতে ফিনালিসিমা খেলেছি…সবকিছুই খুব আবেগের। কিন্তু আজকের আবেগটা অন্য সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।’
এমন আনন্দের দিনেও মার্তিনেজের মনে পড়ে গেছে সৌদি আরবের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচটির হারের কথা, ‘মনে হয়েছিল, আজ যদি আমরা হেরে যাই, তাহলে বাড়ি চলে যেতে হবে। এর জন্যই ভয়ংকর চাপে ছিলাম আমরা। তবে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে আমরা লড়াই করতে পারি। (বিশ্বকাপ ছেড়ে) আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’ মার্তিনেজ এরপর সৌদি আরবের বিপক্ষে হারটি নিয়ে বলেন, ‘গত তিন দিন আমি অনেক ভুগেছি। আমি আমার মনোবিদের সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। বাস্তবতা এই যে দুটি গোল আমিই খেয়েছি। আর এটা মেনে নেওয়াটা কঠিন।’
সবার শেষে মার্তিনেজ সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমি জানি, আমার পাশে সাড়ে চার কোটি আর্জেন্টাইন আছে। আমার আরও ভালো করা উচিত ছিল। তবে আজ দেখিয়েছি, আমরা লড়াই করতে পারি।’