ভারতের একটি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এজেন্সিকে ই–মেইলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আহমেদাবাদে তাঁর নামে বানানো স্টেডিয়ামও উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কারাবন্দী গ্যাংস্টার লরেন্স বিঞ্চয়ের মুক্তি চাওয়ার পাশাপাশি ৫০০ কোটি রুপিও ওই ই–মেইলে দাবি করেছেন হুমকিদাতারা। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে খবরটি জানিয়েছেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, জাতীয় তদন্ত এজেন্সি (এনআইএ) ই–মেইলে এই হুমকি পাওয়ার পর তৎক্ষণাৎ মুম্বাই পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে সতর্ক করে দেয়। গুজরাট পুলিশের পাশাপাশি আরও কিছু নিরাপত্তা সংস্থাকে বিষয়টি জানিয়ে সতর্ক করে দেয় এনআইএ। মুম্বাই পুলিশ এরই মধ্যেই শহরে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র মারফত সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মেইলের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে মুম্বাই পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বাই পুলিশকে এ হুমকির বিষয়টি জানায় এনআইএ।
ই–মেইলে হুমকি দিয়ে যা যা বলা হয়েছে, সেসব প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ‘৫০০ কোটি রুপি ও লরেন্স বিঞ্চয়কে সরকার আমাদের হাতে তুলে না দিলে নরেন্দ্র মোদি ও নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম আমরা উড়িয়ে দেব। ভারতে সবকিছুই বিক্রি হয়। তোমরা নিজেদের যতই সুরক্ষিত মনে করো, আমাদের হাত থেকে নিস্তার পাবে না। কথা বলার ইচ্ছা থাকলে ই–মেইল করো।’
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। গত পরশু এ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ফাইনালসহ এ স্টেডিয়ামে মোট পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৪ সাল থেকে কারাগারে বন্দী রবি বিঞ্চয়। অভিযোগ রয়েছে, কারাগারে থেকেই তিনি নিজের সন্ত্রাসী দল পরিচালনা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মোসেওয়ালাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। গত বছর মোসেওয়ালার ওপর আক্রমণের দায়দায়িত্ব স্বীকার করেন রবি বিঞ্চয়। এর আগে বলিউডের অভিনেতা সালমান খানকে কারাগার থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বিঞ্চয়। তখন বিঞ্চয় বলেছিলেন, দুটি কৃঞ্চসার হরিণ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত সালমান খানের ওপর খেপে আছে তাঁর সম্প্রদায়। ১৯৯৮ সালে সিনেমার শুটিং চলাকালীন দুটি কৃঞ্চসার হরিণ হত্যার অভিযোগ ওঠে সালমানের বিরুদ্ধে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বিঞ্চয় এখন দিল্লির মান্দোলি কারাগারে বন্দী আছেন। সংবাদমাধ্যমটিকে পুলিশ জানিয়েছে, বিদেশে বসে কেউ মজা করেও এ হুমকি দিতে পারেন। যদিও বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে এবং হুমকিদাতাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আর যেহেতু বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে এ হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাই সব কটি ম্যাচেই নিরাপত্তার ব্যাপারটি পুনরায় পর্যালোচনা করবে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা ও পুলিশ বিভাগ। এক পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ‘আমরা এনআইএর কাছ থেকে মেইল পেয়েছি। তারা অন্য সব নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোকেও সতর্ক করেছে। আমরা মেইলের আইডিও পেয়েছি, যেটা ধরে হুমকিদাতাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মেইলটি করা হয়েছে ইউরোপ থেকে।’