বিশ্বকাপের পুরস্কার মঞ্চে খেলোয়াড়কে চুমো দিয়ে বিপাকে স্পেনের ফুটবল-প্রধান

0
191
বিশ্বকাপ ফাইনালের পুরস্কার প্রদান মঞ্চে ছিলেন স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালেস, ছবি: টুইটার

লুইস রুবিয়ালেসের উচ্ছ্বসিত হওয়ার যথেষ্টই কারণ ছিল।

প্রথমবার ফাইনালে উঠেই বিশ্বকাপ জিতেছেন স্পেনের মেয়েরা। ১৩ বছর আগে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন দেশটির ছেলেরাও। জার্মানির পর মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে ছেলে, মেয়ে উভয় বিভাগে বিশ্বকাপ জিতল স্পেন। শুধু তা-ই নয়, এই মুহূর্তে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ এবং অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নও তারা। বৈশ্বিক আসরে স্প্যানিশদের এত এত সাফল্যে ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান হিসেবে রুবিয়ালেস তো উচ্ছ্বসিত হবেনই।

তবে ফিফা নারী বিশ্বকাপ ফাইনালের পর উচ্ছ্বসিত রুবিয়ালেসের কিছু কর্মকাণ্ডে সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্বকাপ জয়ের পর স্পেনের মেয়েদের উদ্‌যাপনে বারবার পোজ দিতে ঢুকে যাওয়া, মেয়েদের হাত থেকে ট্রফি নিয়ে স্পেনের রানীকে দেওয়া, শেষে লকার রুমে ঢুকে হাসিঠাট্টা করা-এ সব তো ছিলই, মাঝে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে পদক নিতে আসা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার জেনিফার হারমোসোকে ঠোটে চুমু দিয়ে ‘ভাইরাল’ও হয়েছেন।

বিশ্বকাপ ফাইনালের পুরস্কারমঞ্চে ছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজি ও স্পেনের রানি লিতিজিয়া। এক এক করে খেলোয়াড়েরা যখন মঞ্চে উঠে পদক নিয়ে যাচ্ছিলেন, প্রায় সবাই উপস্থিত অতিথিদের সঙ্গে আলিঙ্গন করেছেন। তবে হারমোসো আসার পর রুবিয়ালেসের আলিঙ্গনে ছিল বাড়তি মাত্রা, যা অনেকেরই নজরে পড়েছে।

পুরস্কার বিতরণীতে উপস্থিত ছিলেন ফিফা সভাপতি (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) ও স্পেনের রানী (বাঁ থেকে চতুর্থ)
পুরস্কার বিতরণীতে উপস্থিত ছিলেন ফিফা সভাপতি (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) ও স্পেনের রানী (বাঁ থেকে চতুর্থ), ছবি: রয়টার্স

রুবিয়ালেসের এ কাণ্ডকে স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন হারমোসো, ‘বিশ্বকাপ জয়ের অপরিসীম আনন্দের কারণে এটি ছিল সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত পারস্পরিক অঙ্গভঙ্গি। প্রেসিডেন্ট এবং আমার মধ্যে ভালো সম্পর্ক আছে। আমাদের সবার প্রতিই তাঁর আচরণ অনুকরণীয় এবং এটি ছিল স্নেহ ও কৃতজ্ঞতার স্বাভাবিক প্রকাশ।’

ভিডিওতে দেখা যায়, অন্যদের তুলনায় হারমোসোকে দীর্ঘ সময় আলিঙ্গন করেন রুবিয়ালেস। দুই হাতে জড়িয়ে উঁচুতেও তুলে ধরেন। একে অপরের সঙ্গে কথাও বলেন। একপর্যায়ে হারমোসোর ঠোঁটে চুমু খান আরএফইএফ প্রধান। স্পেন দল বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে উদ্‌যাপনের পর লকার রুমে গেলে ইনস্টাগ্রামে লাইভ করেন কেউ।

সেখানে মঞ্চের ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে হারমোসো বলেন, ‘আমার এটা ভালো লাগেনি।’ টুইটারে স্প্যানিশ সাংবাদিক ইরাতি ভিদার শেয়ার করা একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে দেখা যায়, হারমোসোকে একজন জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি তখন কী করছিলেন?’ জবাবে ৩৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার বলেন, ‘আমার কী করার ছিল?’

এ বিষয়ে রেডিও মার্কা রুবিয়ালেসকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘জেনির সঙ্গে চুমু? সবখানেই ইডিয়ট আছে। যখন দুজন মানুষের কোনো গুরুত্ব ছাড়াই স্নেহপূর্ণ মুহূর্ত থাকে, তখন আমরা নির্বোধদের কথায় কান দিতে পারি না। আমরা চ্যাম্পিয়ন, আমি এটা নিয়েই আছি।’

এএসের সঙ্গে হারমোসোও অবশ্য একই ধরনের কথা বলেছেন, ‘বন্ধুত্ব এবং কৃতজ্ঞতার একটি প্রকাশ নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন নেই; আমরা একটি বিশ্বকাপ জিতেছি।’

২০১৭ থেকে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বে আছেন লুইস রুবিয়ালেস
২০১৭ থেকে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বে আছেন লুইস রুবিয়ালেস, ছবি: এএফপি

এখানেই শেষ নয়, রুবিয়ালেসের সমালোচনা হচ্ছে আরও দুটি কাণ্ডের কারণে। কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, স্পেনের খেলোয়াড়েরা যখন উদ্‌যাপন করছেন, তখন ম্যাচের গোলদাতা ওলগা কারমোনার গালে চুমু দিতে গিয়ে বিপত্তি বাধান। আর সালমা পারায়লুয়েলোর ইনস্টাগ্রাম লাইভে দেখা যায়, খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে ঢুকে ছবি তুলছেন রুবিয়ালেস। সেখানে একপর্যায়ে তিনি বলেন, খেলোয়াড়দের জন্য ইবিজায় একটি ভ্রমণের ব্যবস্থা করবে তাঁর ফেডারেশন, যেখানে হারমোসোকে তিনি বিয়ে করবেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে হারমোসোর এজেন্ট এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারশনের মিডিয়া কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সিএনএন। তবে এর জবাব পায়নি মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি। ৪৫ বছর বয়সী রুবিয়ালেস ২০১৭ সালে আরএফইএফের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। খেলোয়াড়ি জীবনে লেভান্তেতে খেলতেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.