প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ রোববার দুপুরের জোয়ারে নদীর পানি বাড়ায় তীরবর্তী বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ও লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে জোয়ারের পানিতে সুন্দরবন প্লাবিত হয়েছে। করমজলসহ বনের উঁচু এলাকাগুলোও দুপুরের জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে। তবে এখনো বন্য প্রাণীর ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, জেলার নদ-নদীর পানি সর্বোচ্চ পাঁচ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সন্ধ্যায় আঘাত হানলে তখন নদীতে ভাটি থাকবে। এতে জলোচ্ছ্বাসের বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
তবে ঘূর্ণিঝড় শুরুর আগেই দুপুরের অতি জোয়ারে জেলা সদর মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা ও রামপাল উপজেলার নদীতীরবর্তী অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বাগেরহাট সদরের দড়াটানা সেতু-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা লুইস বিশ্বাস ফরাজী বলেন, মারিয়া পল্লি ও পাশের দড়াটানা নদীর তীরবর্তী এলাকায় দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস। দুপুরের জোয়ারে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে তাঁদের ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে।
পশুর নদের চিলা এলাকার একরাম সরদার বলেন, ‘বৃষ্টির সঙ্গে আস্তে আস্তে বাতাস বাড়ছে। পোলাপান নিয়ে কি যে করব? আমাগো বেশি ভালো ঘর না। ঝড়ে কি হবে, জানি না।’
পাউবোর বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাগেরহাটের প্রধান নদ-নদীর পানি দুপুরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে মোংলার পশুর নদে। নদে দুপুরে বিপৎসীমার পাঁচ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বলেশ্বর ও ভৈরব নদে বিপৎসীমার দুই থেকে তিন ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন। সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী ও প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, দুপুরের জোয়ারে বনের করমজলকেন্দ্রসহ বেশির ভাগ বনভূমি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এখনো কোনো বন্য প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বন বিভাগের সব স্টেশনসহ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও বনরক্ষীরা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন।