অতি লোভে কিছু ব্যবসায়ী বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেন: বাণিজ্যমন্ত্রী

0
99

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, অতি মুনাফার লোভে কিছু ব্যবসায়ী বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেন। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। ‘শুধু আইন দিয়ে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়’ শীর্ষক উদ্বোধনী প্রতিযোগিতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি ও গমের মতো অনেক পণ্যের চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। যে কোনো আমদানি পণ্যে ব্যবসায়ীদের মুনাফা রেখেই ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। এরপরও অতি মুনাফার লোভে কিছু ব্যবসায়ী বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অসৎ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেট, অবৈধ মজুদদার, কালোবাজারীদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। অবৈধ কারবারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। ভোক্তাদেরও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। ব্যবসায়ীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

টিপু মুনশি বলেন, খাদ্য সংকট হবে‒ এমন ভাবনা থেকে অতিরিক্ত মজুত করা ঠিক নয়। দেশে সব পণ্য পর্যাপ্ত আছে। সংকট হলে সরকার আমদানি করে থাকে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্য আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে‒ এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই রয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। অথচ ডিম, মুরগি, পেঁয়াজ কিংবা কাঁচামরিচের দাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না। এসব পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা অন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে। শুধু সরকার এসব পণ্যের যে দাম নির্ধারণ করে দেয় সেই অনুযায়ী, বিক্রি হচ্ছে কি-না তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ভোক্তা অধিদপ্তর তদারকি করে থাকে।

বর্তমানে প্রচলিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি সংশোধন ও সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে অভিযান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল নেই অধিদপ্তরের। তবে জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই দপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকা দরকার।

অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ব্রয়লার মুরগীসহ বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্য পাঁচ-ছয়টি করপোরেট কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলছে। এ ছাড়াও মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারছেন না।

তিনি পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার, ভোক্তা অধিকার আইনকে আরও শক্তিশালী করা, মজুতদারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান অন্তর্ভুক্তকরাসহ ১০ দফা সুপারিশ করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.