মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আছে। গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ পর তিনি ছাড়াও পেয়ে যান। ৩৪ অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে রয়টার্স ও আইপিএসওএসের এক জরিপে সুখবর পেলেন ট্রাম্প। জরিপ বলছে, এ পরিস্থিতিতে আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পের সম্ভাবনার উন্নতি হয়েছে। ট্রাম্পের মামলা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সাধারণ মার্কিন নাগরিকেরা।
ট্রাম্প গ্রেপ্তারের পরের দুই দিন বুধ ও বৃহস্পতিবার এক জরিপ চালায় রয়টার্স ও আইপিএসওএস। ১ হাজার ৪ জনের ওপর এ জরিপ চালানো হয়েছিল। জরিপের ফলে বলা হয়েছে, ৪৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ফৌজদারি মামলা সঠিক পদক্ষেপই করা হয়েছে। দেখা গেছে, স্বঘোষিত ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের ৮৪ শতাংশই মনে করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা ঠিকই হয়েছে। আর ট্রাম্প যেহেতু রিপাবলিকান, সেহেতু দলটির সমর্থকদের মধ্য মাত্র ১৬ শতাংশ মনে করে মামলা ঠিকই আছে।
রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যে ৪০ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের নেতা ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার পর তাঁকে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা তাদের আরও বেড়ে গেছে। ৩৮ শতাংশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় তাদের সিদ্ধান্তে কোনো প্রভাব পড়বে না, তারা ট্রাম্পের পক্ষেই। মাত্র ১২ শতাংশ অবশ্য গ্রেপ্তারের পর ট্রাম্পকে আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায় না।
এদিকে আগামী বছরের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের মধ্যে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে ট্রাম্পই এগিয়ে আছেন। রিপাবলিকান দলের কর্মীদের মধ্য ৫৮ শতাংশই তাঁকেই চায়। এদিকে রয়টার্স ও আইপিএসওএসের গত সোমবার চালানো প্রকাশিত অপর এক জরিপে রিপাবলিকানদের মধ্য ৪৮ শতাংশই ট্রাম্পের পক্ষেই ছিল। গ্রেপ্তারের পরই এ সংখ্যা ১০ বেড়েছে।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে রিপাবলিকানদের মধ্য দ্বিতীয় অবস্থায় আছেন ফ্লোরিডার গভর্নর ডি স্যান্টিস। তাঁর পক্ষে সমর্থন ২১ শতাংশ। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা ৩৪টি অভিযোগের ব্যাপারে ৫৫ শতাংশ রিপাবলিকানসহ আমেরিকানদের প্রায় ৭৩ শতাংশ বিশ্বাস করে যে ঘটনাটি ঘটেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে স্টরমি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে তাঁর পক্ষ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল স্টরমিকে। ওই বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে এ লেনদেন হয়। নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন ট্রাম্প। তবে এ লেনদেনের বিষয়টি ট্রাম্প তাঁর হলফনামায় গোপন করেছেন। এ মামলায় গত মঙ্গলবার ম্যানহাটনের ফৌজদারি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ট্রাম্প। তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে বিচারপতি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগ পড়ে শোনান। ট্রাম্প অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। পরে ট্রাম্পকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুনানিতে বলা হয়, ট্রাম্পের আইনজীবী দল এ মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে যেকোনো ধরনের আবেদন জানানোর আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময় পাবে। আর পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৪ ডিসেম্বর।