রমজান মাসে ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই এ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। তবে সিএনজি ও আবাসিক খাতে গ্যাসের সরবরাহ কমানো হবে। রমজান মাসে চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, গরম বাড়লে বাড়তি চাহিদা সামলানো মুশকিল হতে পারে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার রমজান ও সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে দিনে ১৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস চেয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। পেট্রোবাংলা সর্বোচ্চ ১১০-১২০ কোটি ঘনফুট দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। গত বুধবার দেশে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ ছিল ১১ হাজার ২৫৯ মেগাওয়াট। এর পুরোটাই সরবরাহ করা হয়েছে দাবি করে পিডিবি জানিয়েছে, দেশে কোনো লোডশেডিং ছিল না সেদিন। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে ১০৩.৮৫ কোটি ঘনফুট। বিতরণ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, গরম কম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা কম ছিল। গরম বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। বিশেষ করে ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময় চাহিদা বেড়ে যায়। পাশাপাশি সেচ মৌসুম চলছে। রাতেই জমিতে সেচ দেওয়া হয়। ফলে সামনের দিনগুলোতে গরম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের সরবরাহ বাড়লে লোডশেডিং করতে হবে।
সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যুৎ বিভাগ রমজানে সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করে জ্বালানি তেল আমদানি স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ডলার সংকট কাটাতে বিদ্যুৎ বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, রমজান ও গ্রীষ্ম সামনে রেখে আগেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সেহরি, ইফতার ও তারাবির সময় যাতে বিদ্যুৎ ঘাটতি না হয়, সে বিষয়টি মনিটর করা হবে। পাশাপাশি ওই সময় বিদ্যুৎ না পেলে কী কী করা হবে– সে বিষয়টিও পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে সাবস্টেশন, ট্রান্সফরমার মেইনটেন্যান্স করা হয়েছে। সমস্যা হলে দ্রুত সমাধানের জন্য জরুরি যন্ত্রপাতি হাতের কাছে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রমজান, সেচ মৌসুম ও গ্রীষ্মকালে গ্যাস উৎপাদন, আমদানি ও বরাদ্দ বিবেচনায় নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে পেট্রোবাংলা। বিদ্যুৎ ও শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে আবাসিক খাতে গ্যাস সরবরাহ সীমিত রাখা হবে। তবে অনেক দিন ধরেই ঢাকার আবাসিক গ্রাহকরা চুলা জ্বালাতে গ্যাস সংকটে ভুগছেন।
পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার মৌসুমে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ সীমিত রাখতে হবে। পাশাপাশি সিএনজি স্টেশন দিনে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ রাখার বিষয়টি নজরদারি করতে হবে।
দেশে এখন দিনে গ্যাসের চাহিদা ৪০০ কোটি ঘনফুট। সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয় ৩০০ কোটি ঘনফুট। জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন ও মাইনস) মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, বিদ্যুৎ ও শিল্পে সরবরাহ বাড়ানোর সময় শহরে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এতে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের চাপ কমবে। আবাসিক খাতের পরিস্থিতি এখনকার মতোই থাকবে। কিছু কিছু সময় একটু সমস্যা হতে পারে।