বিদেশফেরত বাংলাদেশি কর্মীর ৩৫ শতাংশই দেশে ফিরে এসেছেন কাজ না পেয়ে। ২০২০ সালের পর বিদেশে গিয়ে ফেরত আসা ২১৮ কর্মীর ওপর জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে অভিবাসনবিষয়ক গবেষণা সংস্থা রামরু। এর মধ্যে নারী ৪২ জন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অসময়ে ফিরে আসা নিয়ে পরামর্শ সভা’য় এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, ফেরত আসাদের ১৫ শতাংশ বিদেশে গিয়ে চাকরি পাননি। ২০ শতাংশ কর্মী চুক্তি অনুযায়ী কাজ পাননি। প্রতিশ্রুত বেতন না পেয়ে ফিরেছেন ১৪ শতাংশ। আটক হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন ১৬ শতাংশ কর্মী। বৈধ ভিসা না থাকায় সাড়ে ১০ শতাংশ ও শারীরিক অসুস্থতায় ফিরেছেন ১২ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মী।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা ভিসা বাণিজ্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বৈধভাবে বিদেশি গিয়ে কর্মী কেন কাজ পাবেন না? কাজ না থাকলে ভিসা দেওয়া হলো কেন। প্রবাসী টাকা না পাঠালে কী হয়, তা এখন সবাই টের পাচ্ছেন। তাই তাদের গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।
অভিবাসনবিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কর্মীরা কয়েক লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ যান। সময়ের আগে ফিরে আসায় তাদের আর্থিক ক্ষতি হয়, এটা দ্বিগুণ অবিচার।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর বলেন, ৩ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ গিয়ে কাজ না পেলে এটি আসলে মানব পাচার।
সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, দূতাবাসের মাধ্যমে নিয়োগকর্তা কোম্পানির তথ্য যাচাই করে কর্মী পাঠানো হয়। তাই বোয়েসেলের পাঠানো কর্মী অসুস্থতা ছাড়া ফেরে না।
সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন ও হেলভেটাসের সহায়তায় তৈরি রামরুর গবেষণায় বলা হয়েছে, ফিরে আসা কর্মীদের সবাই অদক্ষ শ্রমিক। তাদের মাত্র ৩ শতাংশ স্বেচ্ছায় ফিরেছেন। যারা আটক হয়ে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের ৪৭ শতাংশের কাজের বৈধ অনুমতিপত্র ছিল না।
রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, বছরে কত কর্মী পাঠানো হলো, তা সরকারের সফলতা নয়। বরং গুণগত অভিবাসন নিশ্চিত করাই হলো সফলতা।