বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগে সর্বপ্রথম সফল লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) বগুরা জেলার মন্তেজার রহমান (৫৩) নামে এক রোগীর লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়। রোগীকে লিভার দান করেন তার বোন শামীমা আক্তার (৪৩)।
রোববার বিএসএমএমইউতে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ লিভার প্রতিস্থাপন সংশ্লিষ্ট এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোগী মো. মন্তেজার রহমানের সিরোটিক লিভারের পুরোটাই কেটে বের করে ফেলা হয়। পরে তার বোনের দেহ থেকে কেটে নেেওয়া সুস্থ লিভারের ৬০ শতাংশ জোড়া দেওয়া হয়। লিভারদাতা মোসা. শামীমা আক্তারের লিভারটি ধীরে ধীরে রিজেনারেট করবে। এটিই লিভার নামক অঙ্গটির একটি বিশেষত্ব। ওই রোগী নন-সি জনিত ‘এন্ড স্টেজ লিভার ডিজিজে’ আক্রান্ত ছিলেন। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন বলেও জানান তিনি।
ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, লিভার প্রতিস্থাপনে খরচ পড়েছে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। কমপক্ষে এক বছর রোগীকে ফলোআপে থাকবে হবে। এছাড়াও দিনে আড়াই হাজার টাকার ওষুধ লাগবে।
উপাচার্য বলেন, দেশের স্বল্প আয়ের ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যাতে এই চিকিৎসা সুবিধা পেতে পারে এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনাক্রমে ইতোমধ্যে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন অপারেশনটি ছিল একটি লিভিং ডোনার লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন; এর অর্থ হলো রোগীর আত্মীয় সম্পর্কিত কোন ডোনার থেকে লিভারের একটি অংশ কেটে রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয় (রোগীর সিরোটিক লিভারের পুরোটিই কেটে ফেলা হয়)।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮০ লাখ মানুষ লিভার রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা যায় প্রায় ২৩ হাজার জন। তবে লিভার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪-৫ হাজার রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। সচ্ছল রোগীরা ৩০ লাখ থেকে কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে লিভার প্রতিস্থাপন করছেন। কিন্ত অসচ্ছলরা লিভার প্রতিস্থাপন করতে না পেরে মারা যাচ্ছেন।