দলের দিকে তাকানো দায়িত্ব নয়, সরকারকে নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগ করব: সিইসি

0
77
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোনো দলের দিকে তাকানো আমাদের দায়িত্ব নয়। নির্বাচনে সরকারকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যে আইন রয়েছে তা প্রয়োগ করা হবে।

নির্বাচন ভবনে আজ মঙ্গলবার কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে বৈঠক শেষ সিইসি এসব কথা বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আপনারা অংশগ্রহণমূলক, উৎসবমুখর করে তুলুন। আমাদের যে দায়িত্ব থাকবে, কোনো দলের দিকে তাকানো নয়, ভোটাররা যেন নির্ভয়ে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেই চেষ্টাটাই আমরা মূলত করব। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সরকার এবং আমলাতান্ত্রিক সরকারকে নিয়ন্ত্রণ আইনে আমাদের যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেটি প্রয়োগের চেষ্টা করব।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আশ্বাস দিয়েছি যে, আমাদের দায়িত্ব সাধ্য অনুযায়ী যতকুটু সম্ভব পালন করার তা পলনের চেষ্টা করব। আবার এটাও বলেছি যে হ্যাঁ, নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্বাচন আয়োজনের একটা বড় দায়িত্ব আছে, একই সঙ্গে আপনারাও যারা দলীয় নেতৃবৃন্দ আছেন, কর্মী আছেন; তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে সার্বিকভাবে নির্বাচনের জন্য একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া। খুব প্রতিকূল পরিবেশ যদি বিরাজ করে তাহলে আমাদের জন্যও অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তে পারে।

সিইসি আরও বলেন, উনি (কাদের সিদ্দিকী) বলেছেন যে নির্বাচনের সময় সরকার হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আমরা এটা বুঝি কিন্তু তার পরও গ্রাউন্ড রিয়েলিটিটাকে মাথায় রেখে আমরা বলেছি সেই ক্ষেত্রেও আমরা চেষ্টা করব যতদূর সম্ভব দক্ষতার সঙ্গে, সততার সঙ্গে এবং সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্বটা পালন করব। তিনি (কাদের সিদ্দিকী) বলেছেন যদি আসন্ন বাসাইল পৌরসভা নির্বাচনটা সুষ্ঠু হয়, তাহলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওনারা অংশ নেবেন। আমরা বারবার বলেছি যে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। উনি বলেছেন অংশগ্রহণমূলক যদি না হয়, আমাদের করার কিছু থাকবে না।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনে আমাদের সবাইকে সহায়তা করতে হবে। সরকারের সদিচ্ছার কথা বলেছি। বঙ্গবীর আমাদের বলেছেন, আমরা কিছুটা দুর্বল কী-না। আমরা বলেছি না, সরকারে সদিচ্ছা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রাজনৈতিক সরকারের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে কিন্তু অনেকটা। দীর্ঘদিনের যে আমলাতান্ত্রিক সরকার অর্থাৎ ডিসি, এসপি, বিডিআর…। আমরা বারবার একটা অভিযোগ শুনেছি যে, পুলিশের একটা ভূমিকা থাকে নেতিবাচক। এটা পুলিশের জন্য নয়, স্থানীয়ভাবেই হয়তো পুলিশকে পক্ষাশ্রিত করার চেষ্টা হয়ে থাকে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে। পুলিশের হাতে অস্ত্র থাকে, শক্তি থাকে, ইউনিফরম থাকে, সেই দিকটাও আমরা দেখব। আমি পুলিশকে দোষারোপ করছি না। আমিই পুলিশের কাছে যাচ্ছি কনভিন্স করার জন্য, পুলিশ আমার কাছে আসছে-এই বিষয়টাই কিন্তু আমাদের সবার নিউট্রলাইজ করতে হবে।

দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভাঙা যাবে কি-না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমরা যে নির্বাচনগুলো করেছি, সেগুলো তুলনামূলকভাবে সুশৃঙ্খল হয়েছে। আমি বলব না যে অ্যাবস্যুলিটলি হয়েছে। সেক্ষেত্রে কিন্তু আমরা সরকার, পুলিশ এবং প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি। আমাদের এটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং কখনও অসহযোগিতা পাইনি। আশা করি, জাতীয় নির্বাচনেও তারা এই ভূমিকাটা পালন করবেন, যাতে জনগণের আস্থা, আপনাদের ওপর সম্মানবোধ, আপনাদের ওপর, আমাদের ওপর, সরকারের ওপরও প্রতিষ্ঠা পায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.