ওই নারীর বরাতে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সম্রাট খানকে হত্যা করা হয়। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের বাঁশেরবাদা এলাকায় সীমা খাতুন ও তাঁর স্বামী আবদুল মমিনের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সম্রাটের মামা শামসুল হকের ভাষ্য, সম্রাট পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে। সম্রাট খান গত সাত বছর ধরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে একটি কোম্পানির হয়ে ভাড়ায় গাড়ি চালান। বৃহস্পতিবার সকালে কাজে বের হন তিনি। ওই দিন রাত ৯টার দিকে তাঁর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের শেষ কথা হয়। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তাঁর ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাতেই সম্রাটকে খোঁজাখুঁজি করেন তাঁরা। ঘটনাটি তাঁরা ঈশ্বরদী থানার পুলিশকে জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, সীমার স্বামী আবদুল মমিন গাড়িচালক। তিনি পলাতক আছেন।
সীমার বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ আলম বলেন, বাড়িতে হত্যার পর সম্রাটের লাশ লুকানোর জায়গা পাচ্ছিলেন না মমিন ও সীমা। পরে সম্রাটের লাশ বস্তাবন্দী করে তাঁরা ফেলে দেওয়ার জন্য গাড়িতে করে বের হন। যে গাড়িতে করে সম্রাটের লাশ নেওয়া হয়, সেটা সম্রাট চালাতেন। লাশ নিয়ে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মমিন। কিছুক্ষণ ওই অবস্থায় গাড়ি চালান তিনি। আশপাশে কোনো উপযুক্ত জায়গা না পেয়ে স্ত্রীকে বাড়িতে নামিয়ে মমিন আবার গাড়ি নিয়ে বের হন।
পদ্মাপাড়ে একটি কলাবাগানের সামনে খোলা জায়গায় সম্রাটের লাশবাহী গাড়িটি পার্ক করে রাখা ছিল। আজ শনিবার সকালে গাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
পদ্মার পাড়ে যেখানে লাশ উদ্ধারের ঘটনা, সেখানে গিয়ে কথা হয় চরসাদিপুর এলাকার মাটিকাটার শ্রমিক জহুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিদিনই পদ্মার পাড়ে অনেক মানুষ গাড়ি নিয়ে বেড়াতে আসেন। শুক্রবার সকাল থেকেই গাড়িটি পড়ে ছিল।
চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার মোজাম্মেল হক বলেন, আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তিনি গাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার কথা জানতে পারেন। ৬টার দিকে সেখানে যান। গাড়ির দরজা টান দিতেই খুলে যায়। দরজায় কোনো লক ছিল না। গাড়ি থেকে ২০ ফুট দূরে চাবি পাওয়া যায়। তিনি দ্রুত বিষয়টি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে জানান।