সিলেটের গোয়াইনঘাটের বাসিন্দা মো. ফয়জুদ্দিনের বাড়িতে তিন সপ্তাহ আগে জাফর মিয়া (২৪) নামের এক যুবক আশ্রয় চান। সে সময় জাফর বলেন, তিনি অনাথ ও অসহায়। এসব কথা শুনে জাফরকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন ফয়জুদ্দিন। কিন্তু এর কিছুদিনের মাথায় ফয়জুদ্দিনের এক বছর বয়সী সন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যান জাফর।
জাফর ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই শিশুকে বিক্রি করে দেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করলেও জাফরকে আটক করতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শেখ মো. সেলিম।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ মো. সেলিম বলেন, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের উপরগ্রামের মো. ফয়জুদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন জাফর। সে সময় জাফর তাঁর পুরো নাম–ঠিকানা কিছুই জানাননি। শুধু বলেছিলেন, তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজারে। কিছুদিন বাড়িতে থাকার ফলে ফয়জুদ্দিনের শিশুসন্তানের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল জাফরের।
২৭ মে সকালে ওই শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে যান জাফর। পরে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সর্দারপুর গ্রামের মমতা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর কাছে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করে দেন জাফর।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা মো. ফয়জুদ্দিন গোয়াইনঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরপর নবীগঞ্জে গিয়ে গতকাল সোমবার রাতে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মমতা বেগমকেও আটক করে পুলিশ। তবে জাফরকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। শিশুটিকে অপহরণের সময় ফয়জুদ্দিনের একটি মুঠোফোন চুরি হয়। সেই মুঠোফোন নিয়ে গিয়েছিলেন জাফর। পরে সেটি বন্ধ করে দেন তিনি। এর আগে মুঠোফোনে জাফর একাধিকবার মমতা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সে সূত্র ধরে নবীগঞ্জে অভিযান চালায় পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মমতা বেগম ও জাফর পূর্বপরিচিত। মমতা বেগমের তিন মেয়ে। পরিচয়ের সূত্র ধরে মমতা জাফরকে বলেছিলেন, একটি ছেলেসন্তান এনে দিতে পারলে তাঁকে ১৫ হাজার টাকা দেবেন। টাকার জন্যই জাফর শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জাফরকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।