নাবিলা নূর ও সাবিলা নূর। দুই বোন। নাবিলা বড়। থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। পেশায় নগর–পরিকল্পনাবিদ। টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গাইল শহরের ডিরেক্টর অব কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট হিসেবে কাজ করেন। আর সাবিলাকে তো সবাই চেনেন, অভিনয়শিল্পী। এবার ‘মুখোমুখি অন্ধকার’ নামে এক ঘণ্টার একটি নাটকে দুই বোনকে একসঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যাবে। বাস্তবের মতো গল্পেও তাঁদের বড় বোন-ছোট বোন চরিত্রেই দেখা যাবে।
নাটকটির গল্পও লিখেছেন সাবিলা। ‘পারাপার’ ও ‘হৃদিতা’ নামে এর আগে আরও দুটি নাটকের গল্প লিখেছেন সাবিলা। ‘মুখোমুখি অন্ধকার’ তাঁর তৃতীয় গল্প। সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে নাটকটির শুটিং শেষ হয়েছে।
দুই বোনের চরিত্রে দুই বোনকে দিয়ে কেন অভিনয় করালেন, জানতে চাইলে পরিচালক অনন্য ইমন বলেন, ‘গল্প পড়ার পর মনে হলো, এখানে বড় বোনের চরিত্রে সাবিলার বড় বোনও করতে পারেন। আমার জানামতে, নাবিলা ভালো গান করে, মঞ্চনাটকের সঙ্গেও সে জড়িত। আর দেখলাম, আপন দুই বোন চরিত্র দুটি করলে কেমিস্ট্রিটাও উপযুক্তভাবে পাওয়া যাবে। তখন সাবিলার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি।’
নাটকটিতে বড় বোন সহশিল্পী হওয়া প্রসঙ্গ সাবিলা নূর বলেন, ‘আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন নাবিলার কথা মাথায় ছিল না। পরিচালক গল্পটি পড়ার পর নাবিলাকে নেওয়ার আগ্রহ দেখান। আর নাবিলাও তখন দেশে ছিল।’
প্রথমে কাজটি করতে রাজি ছিলেন না নাবিলা। তাঁর বোন সাবিলা বলেন, ‘পরিচালকের অনুরোধে তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে সে লজ্জা পাচ্ছিল। যাহোক, আমি যেহেতু সহশিল্পী, তাই কমফোর্ট জোনের জায়গা থেকে শেষ পর্যন্ত কাজটি করতে রাজি হয় নাবিলা।’ ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময় ‘বেলি’সহ তিন-চারটি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। বড় হয়ে আর টেলিভিশনে কাজ করা হয়নি। তবে দেশের বাইরে মঞ্চনাটকের সঙ্গে জড়িত নাবিলা। ভালো গানও করেন।
দুই বোনের একসঙ্গে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সাবিলা আরও বলেন, ‘ব্যাপারটা আমাদের দুজনের জন্য একটু ইউনিক ছিল। ভালো লেগেছে। ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে। দুজনের জন্য বেশ মজারও ছিল।’
অনেক দিন পর টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে কেমন লাগল, জানতে চাইলে ভালো লাগার কথাই বললেন নাবিলা, ‘খুবই ভালো লেগেছে। রিয়েল লাইফে দুই বোন নাটকের দুই বোনের চরিত্র ভালোভাবেই করতে পেরেছি। ঢাকার বাইরে গিয়ে কাজটি করেছি। দেশে থাকলেও দুই বোনের একসঙ্গে সময় কাটানো ওভাবে হয় না। কারণ, সাবিলা শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকে। কাজটি করতে গিয়ে আমরা দুই বোন একসঙ্গে টানা সময়ও কাটাতে পেরেছি।’
নাবিলা আরও বলেন, ‘অন স্ক্রিন, অফ স্ক্রিন—দুই বোন একসঙ্গে কাজ করেছি। দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। সাধারণত পরিবারে বড়-ছোট দুই বোনের মধ্যে যে ডাইনামিক দেখি, তাতে ছোট বোনকে বড় বোন শাসন করার চেষ্টা করে। অনেক সময় ছোট বোন নিয়মের বাইরে যেতে চায়। তার রাশ টেনে ধরতে চায় বড় বোন। এই বিষয়গুলো নাটকটিতে সুন্দরভাবে এসেছে। পরিবারে যাঁরা দুই বোন, তিন বোন আছেন, নাটকটি দেখতে বসে নিজেদের রিলেট করতে পারবেন তাঁরা।’
নিয়মিত অভিনয় করবেন কি না, জানতে চাইলে নাবিলা বলেন, ‘হয়তো নিয়মিত সম্ভব হবে না। আমি তো দেশে থাকি না। দেশে থাকা অবস্থায় এভাবে সুযোগ হলে কাজ করা যেতেই পারে। কারণ, আমি তো থিয়েটারটা করি।’