বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে রুমায় বগা লেক পর্যন্ত এবং থানচিতে তুমাতুঙ্গি ও তিন্দু পর্যন্ত ভ্রমণ করা যাবে। নির্দেশিত স্থান ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়া যাবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক শামীম আরা আংশিক প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসকের গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩ জুন জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির রক্ষা ও সমন্বয়–সংক্রান্ত কোর কমিটির সভার সিদ্ধান্তে ও সেনাবাহিনীর বান্দরবান ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের বৃহস্পতিবারের চিঠির আলোকে দুই উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণ–সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা শর্তসাপেক্ষে বাতিল করা হলো। থানচি উপজেলা সদর থেকে মদক অভিমুখে তিন্দুমুখ ও বাকলাই অভিমুখে তুমাতুঙ্গি পর্যন্ত পর্যটকেরা যেতে পারবেন। রুমায় রুমা বাজার থেকে মুনলাইপাড়া হয়ে বগা লেক পর্যন্ত যাওয়া যাবে।
দুই উপজেলায় নির্দেশিত স্থান ভ্রমণে যাওয়ার জন্য তিনটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলো হচ্ছে, প্রথমত, নির্দেশিত স্থানগুলোর বাইরে কোথাও যাওয়া যাবে না; দ্বিতীয়ত, প্রশাসনের নিবন্ধিত ট্যুরিস্ট গাইড সঙ্গে নিতে হবে এবং পর্যটন সেবাকেন্দ্রে ও চেকপোস্ট চাহিত তথ্য (জাতীয় পরিচয়পত্রের ছায়ালিপি, মুঠোফোন নম্বর) দিতে হবে।
রুমায় ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। মাঝে কিছুদিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এরপর গত বছরে পুরো জেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এক মাস পর ৬ নভেম্বর থেকে বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রোয়াংছড়ির দেবতাখুম থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় পর্যটকেরা বর্তমানে সেখানে ভ্রমণ করতে পারেন।
রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি দুর্গমে নতুন আত্মপ্রকাশ হওয়া সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তৎপরতা শুরু হয় ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়। কেএনএফের সঙ্গে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতার ব্যাপারেও অভিযোগ উঠেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই বছরের ৯ অক্টোবর থেকে কেএনএফ ও শারক্কীয়া জঙ্গিদের দমনে সমন্বিত অভিযান শুরু করে। অভিযানে নিরাপত্তা বিবেচনায় ২০ অক্টোবর থেকে রুমা ও রোয়াংছড়িতে পর্যটক ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পাহাড় ধসের আশঙ্কায় লামা উপজেলা প্রশাসন ১ জুন থেকে লামা মিরিঞ্জা পাহাড়ে পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল বন্ধ ঘোষণা করে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সেগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।