সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের বাজেট এখন অনাথ আর আইএমএফ তার পালক পিতা। আইএমএফ যখন কোনো দেশে কর্মসূচি নিয়ে যায়, তখন সেই দেশের অর্থনীতির ওপর এক কর্তৃত্ব আরোপ করে বা আরোপের চেষ্টা করে।
আজ সোমবার ‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে’ শীর্ষক সিপিডি-নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আইএমএফ যখন কোনো দেশে কর্মসূচি নিয়ে যায়, তখন অনেক সময় সে দেশে বৈষম্য বেড়ে যায়। তারা যেসব শর্ত দেয়, তার কারণেই এটি হয়। এমনকি আইএমএফের নিজস্ব গবেষণায় এটা উঠে এসেছে।
আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে, তার শর্তের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভর্তুকি হ্রাস। এ প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ভর্তুকি অনেক সময় ভালো হয়, আবার খারাপও হয়। বিদ্যুৎ খাতে যে বিপুল পরিমাণে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হচ্ছে, তা দিয়ে সার ও ডিজেলের মতো খাতেও ভর্তুকি বাড়ানো সম্ভব।
এ ছাড়া আইএমএফ বাড়তি কর আদায়ের কথা বলেছে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এর সঙ্গে দ্বিমত করার সুযোগ নেই। কিন্তু কাদের কাছ থেকে সেই কর আদায় করা হবে, সেটাই বড় কথা। এ ছাড়া দেশে কর আদায়ের আদর্শ ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি।
দেশের অনেক মানুষ উত্তরাধিকারসূত্রে বিপুল সম্পদ লাভ করছেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, সেখান থেকে কর আদায় করা উচিত।
ব্যাংকের সুদহার উন্মুক্ত বা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছে আইএমএফ। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে এটা করাই উচিত। সেই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন, দেশে সুদহার বৃদ্ধির অভিঘাত পড়ে মূলত এসএমই খাতে, সে দিকেও খেয়াল রাখা উচিত বরে তিনি মত দেন।
সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি অনেক সময় প্রচারের অভাবে গরিব মানুষের নজরে আসে না। সে জন্য তাঁরা সেগুলোর সুবিধা নিতে পারেন না। এ ছাড়া খাদ্য সহায়তার জন্য যত কার্ড দেওয়া হয় তা অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।